গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ২০ প্রার্থী

0

রবিউল কবির মনু গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি:

আসন্ন পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ২০জন প্রার্থীর অবিরাম প্রচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে পুরো উপজেলা। এ উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন ও ১ পৌরসভার সর্বত্র চলছে বিরামহীন নির্বাচনী প্রচারণা। পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে রাস্তা-ঘাট, বিভিন্ন অফিস চত্বর, ব্যবসা-বিপনী প্রতিষ্ঠান। সমানতালে পাল্লা দিয়ে চলছে মাইকিং। নির্বাচন কমিশনের বিধি মোতাবেক দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত উপজেলার প্রতিটি হাট-বাজার ও গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলো থাকে মাইকের দখলে।

আগামী ১৮মার্চ দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা ব্যতিত ৬টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। গত ২৮ ফেব্রুয়ারী প্রার্থীদের মাঝে রিটানিং অফিসার নির্বাচনী প্রতীক বরাদ্দ দেয়ার পর থেকেই প্রচারণায় সরগরম হয়ে ওঠে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার প্রতিটি জনপদ।

এবারের নির্বাচনে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান পদে শেষ পর্যন্ত ৫জন প্রার্থীকে চুড়ান্ত ঘোষণা করেন রিটার্নিং অফিসার। তারা হলেন আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মহিমাগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ প্রধান, স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ঘোড়া প্রতীকের মুকিতুর রহমান রাফি, ওয়ার্কাস পার্টির হাতুরী প্রতীকের প্রার্থী হয়েছেন উপজেলা ওয়ার্কাস পার্টির সভাপতি আব্দুল মতিন মোল্লা, দোয়াত-কলম প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী ফেরদৌস আলম রাজু এবং আনারত প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু জাহিদ চৌধুরী। এর মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী ফেরদৌস আলম রাজু গত ৬ মার্চ উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল লতিফ প্রধানকে সমর্থন জানিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।

ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন ৫জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন ৮জন প্রার্থী। ভাইস চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন টিউবয়েল প্রতীকে আতলতামাসুল ইসলাম প্রধান শিল্পী, মাইক প্রতীকে মো. শরিফুল ইসলাম সরকার তাজু, তালা প্রতীকে মো. আব্দুর রহমান খন্দকার, চশমা প্রতীকে মো. আসাদুজ্জামান হীরু এবং উড়োজাহাজ প্রতীকে মো. মোফাচ্ছেরীন আলম সরকার পল্লব।

এছাড়াও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বি ৮ প্রার্থী হলেন বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আকতারা বেগম রূপা (কলস), জেবুন নেছা রমিজ (সেলাই মেশিন), শাকিলা বেগম (ফুটবল), উম্মে জাহান (প্রজাপতি), আফরুজা খাতুন (ক্যামেরা), আসলামা বেগম (পদ্মফুল), রোকেয়া বেগম (হাঁস) এবং শায়লা পারভীন (বৈদ্যুতিক পাখা)।

উপজেলার প্রতিটি হাট-বাজার ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোকে টার্গেট করে বিভিন্ন প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকেরা বিরামহীন প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে এক প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণার দায়িত্বে থাকা একজন কর্মী জানান, আগামী ১৮মার্চ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে তাই হাতে সময় তেমন বেশি নেই। একারণে নিজের প্রার্থীকে প্রচারণায় এগিয়ে রাখতে সচেষ্ট সকল প্রার্থীর কর্মীরা। এক প্রার্থীর সমর্থকরা বাইসাইকেল মিছিল করছে তো আরেক প্রার্থীর সমর্থকরা মোটর সাইকেল মিছিল করছে। কোন কোন প্রার্থীর সমর্থকরা বিপুল সংখ্যক অটো ভ্যান যোগার করে মিছিল বের করছে।

প্রচার প্রচারণায় এমন নির্বাচনী উৎসব লক্ষ করা গেলেও ভোটের মাঠে ভোটার উপস্থিতি নিয়ে গোবিন্দগঞ্জের সচেতন নাগরিকদের মাঝে রয়েছে আশংকা। তাঁরা বলছেন, বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর দেশের সাধারণ ভোটারা আর ভোট কেন্দ্রমূখী হচ্ছে না। উদাহরণ হিসেবে তাঁরা পলাশবাড়ী-সাদুল্যাপুর আসনের সংসদ নির্বাচন ও সদ্য সমাপ্ত ঢাকা সিটি করর্পোরেশনের নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ার কথা বলেছেন। তবে প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকেরা আশা প্রকাশ করে বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনে ভোটারা ভোট কেন্দ্রে গিয়ে নিজ নিজ পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেবেন এবং ভোটার উপস্থিতিও ভাল হবে। তবে উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ হবে এটাই সকলের প্রত্যাশা।

Leave A Reply