বরিশালে ১০ বছরের শিশু গৃহপরিচারিকাকে নির্যাতন

গৃহকর্তী-গৃহকর্তার নির্যাতনের শিকার শিশু লামিয়া। ছবি: বাংলানিউজ

বরিশাল: বরিশালে লামিয়া আক্তার মরিয়ম (১০) নামে এক শিশু গৃহপরিচারিকাকে অমানবিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে পুলিশ নগরের ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের মদিনা সড়কের একটি বাসা থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করেছে।

এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত গৃহকর্তী শারমিন আক্তারকে (৩০) আটক করা হয়েছে। তবে আটকের খবর পেয়ে ওই গৃহকর্তীর স্বামী আশরাফুল ইসলাম চৌধুরী (অপর নির্যাতনকারী) সটকে পড়েছেন।

নির্যাতনের শিকার লামিয়া গৌরনদী থানাধীন বাটাজোরের নোয়াপাড়া এলাকার ইকবাল সরদারের মেয়ে।

মঙ্গলবার (১৬ অক্টোবর) এ ঘটনায় নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার নাসির উদ্দিন মল্লিক।শিশু গৃহপরিচারিকাকে নির্যাতন করায় আটক শারমিন। ছবি: বাংলানিউজতিনি বাংলানিউজকে জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে, বরিশাল মেট্রোপলিটনের এয়ারপোর্ট থানাধীন ২৯নং ওয়ার্ডের মদিনা সড়কের ‘আকাশ মঞ্জিল’ নামক বহুতল ভবনের চারতলার ভাড়া বাসায় লামিয়া নামে ১০ বছরের এক শিশুকে আটকে নির্যাতন চালাচ্ছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার (১৫ অক্টোবর) দিনগত রাতে ওই বাসায় অভিযান চালিয়ে ভিকটিম লামিয়াকে উদ্ধার ও গৃহকর্তী শারমিনকে আটক করা হয়।

ভিকটিম ও অন্যান্য সূত্রে জানা গেছে, গৃহকর্তা আশরাফুল ও তার স্ত্রী শারিমন কয়েকমাস আগে লামিয়ার দাদিকে প্রলোভন দেখিয়ে শিশুটিকে বরিশালে নিয়ে আসে। পরে স্বামী-স্ত্রী মিলে মদিনা সড়কের ভাড়া বাসায় লামিয়াকে আটকে রেখে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক শ্রম শোষণের লক্ষ্যে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতো।

সহকারী পুলিশ কমিশনার আরও জানান, লামিয়াকে মারধর করাসহ তার মাথার চুল কামিয়ে (কেটে) দেওয়া, বিভিন্নভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হতো।

এদিকে উদ্ধারের পর লামিয়া জানায়, গত ছয়মাস আগে আশরাফুল তার ছোট সন্তানের দেখভালের কথা বলে তাকে আনে। তবে আশরাফুল ও তার স্ত্রী লামিয়াকে দিয়েই করাতো সাংসারিক সব কাজকর্ম। কাজে কোনো ধরনের ভুল হলেই স্বামী-স্ত্রী দু’জনের নির্যাতন চালাতো লামিয়ার ওপর।

ধারাবাহিকভাবে নির্যাতনের শিকার লামিয়ার দু’ হাতেই ক্ষত তৈরি হয়েছে। এর চিকিৎসা না করানোর ফলে তাতে পচন ধরেছে। এছাড়া দু’চোখ এবং মাথা ফুলে বড় আকার ধারণ করেছে। তাই উদ্ধারের পরপরই পুলিশ লামিয়াকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.