- কাজীপুর জবর দখলকৃত জমিতে রোপন করা ফসল নষ্ট করে উল্টো প্রকৃত জমির মালিককে ফাসানোর চেষ্টা - October 18, 2024
- ধনবাড়ীতে ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে এক বিশাল জনসভা - October 18, 2024
- ঢাঙ্গীপুকুর আদর্শ গ্রাম নূরানী মাদ্রাসার ভিত্তি প্রস্তরের শুভ উদ্বোধন - October 18, 2024
সাইফুল ইসলাম: বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি :
এতদিন কে এন এফ পৃথক রাজ্য প্রতিষ্ঠার নামে চাঁদাবাজীতে লিপ্ত ছিল। তাদের মুখপাত্র দ্বারা পৃথক রাজ্য প্রতিষ্ঠার দাবী থেকে সরে আসলেও প্রকৃতপক্ষে তারা এখনও বম পাড়া গুলোতে বিচ্ছিন্নভাবে স্বাধীনতার নামে অস্ত্র ক্রয় করার জন্য অর্থ আদায় করে যাচ্ছে।
এই প্রতিবেদক সদরের লাই পাড়া, ফারুক পাড়া, শ্যারন পাড়া, গেৎশিমানী পাড়া, হেব্রন পাড়া, রুমার বেথেল পাড়া, ইডেন পাড়া, মুনলাই পাড়া, পাইন্দু ইউনিয়নের বাসত্লাং পাড়া, জুরবারং পাড়া, সালৌপি পাড়া, আরথাহ পাড়া, মুয়ালপি পাড়া, মুননুয়াম পাড়া, রেমাক্রী প্রাংশার দার্জিলিং পাড়া, রোয়াংছড়ির সুয়ানলু পাড়া, দুর্নিবার পাড়া, কাপ্লং পাড়া, পাইক্ষ্যং পাড়ার বম জনগোষ্ঠিদের সাথে কথা বলে এর সত্যতা পেয়েছেন। এতে শোষিত হচ্ছে বম জাতি নিজেরাই। আর এদের নেতারা পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের মিজোরামে বসে আরাম আয়েশ ফুর্তিতে মেতে থাকেন বলে জানা যায়।
পাড়ার কিছু উঠতি যুবক কুকিচীন সংগঠনের নামে শোষণ করছে বম জনগোষ্ঠীকে অভিযোগ পাড়াবাসীদের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বান্দরবান শহরে থাকা বম সম্প্রদায়ের উদীয়মান তরুনের নিকট হতে এ বক্তব্য পাওয়া যায়। এ তরুণ বলেন কে এন এফ পৃথক রাজ্য প্রতিষ্ঠার নামে ও বাঙালীদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করার কথা বলে প্রতি ঘরে ১ হাজার টাকা হারে মাসিক টাকা নিয়ে থাকে। আমাদের বম সম্প্রদায় এখন পাহাড়ে শোষিত হচ্ছি কে এন এফ এর মাধ্যমে। আমাদের বাবা মা ভাই বোন রা পাহাড়ে জুমচাষ করে ফসল ফলায়, উৎপাদিত শস্য বাজারজাত করে, যা অর্থ আয় হয় তা বাজার থেকে সাপ্তাহিক খাদ্য, ঔষধ ক্রয় করে ফিরার সময় রেখে দিতে হয় কে এন এফ এর ধার্য্য মতে নিম্ম আযের মাসিক ৩শ টাকা, মধ্যম আয়ের ৭শ টাকা, উচ্চ আয়ের ১ হাজার টাকা হারে।
বম সম্প্রদায়ের অনেকেই বলছেন কুকিচীন নামে পৃথক রাজ্য গঠন করা কখনো সম্ভব নয়। বম জাতি সংখ্যায় খুব কম। এ জাতি শান্ত প্রকৃতির হলেও মাথা খেয়েছে বম নেতারাই। যে সব এলাকা তাদের স্টেট হিসাবে নিতে চায়। এসব উপজেলায় বাঙালী সম্প্রদায় সহ মারমা, ম্রো, ত্রিপুরা ও তংচংগ্যা সম্প্রদায়ের বসবাস অত্যাধিক বেশী। তাছাড়া বম জাতি সরকারী চাকুরীতে এপ্লাই করতে চাই না। এটা তাদের গোড়ামী। একটু শিক্ষিত হয়ে মিজোরামে পাড়ি জমায়। দেশের জন্য কিছু করতে চাই না। তাই দেশের প্রশাসনিক শাখা গুলোতে গুটি কয়েক শিক্ষক ছাড়া, তৈরী হয়নি কোন আইনজীবী, সরকারী চিকিৎসক, সরকারী প্রকৌশলী, বিচারক, পুলিশ ও সেনা কর্মকর্তা।
তাছাড়া ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় দেশের জন্য বম জাতির তেমন কোন অবদানও ছিল না। অনেকেই স্বাধীনতা বিরোধী ছিলেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরও তাদেরকে জাতীয় কাজে কর্মে তেমন দেখা যেত না। পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসা স্বৈর শাসক জিয়াউর রহমান যখন সেনা তত্ত্বাবধানে চিম্বুক সড়ক তৈরীর কাজ করেন তখন আস্তে আস্তে রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানাদিতে সম্পৃক্ত হতে দেখা যায়। তৎকালী্ন জেলা প্রশাসক ফারুক সাহেবের নামে গঠিত হয় ফারুক পাড়া। কাপ্তাই বাঁধের উদ্ভাস্তু বম সম্প্রদায়ের লোকজন পূনর্বাসনের সুযোগ পায়।
এরশাদ সরকার আমলে স্থানীয় সরকার পরিষদে নির্বাচন দিলে এ সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব চোখে পড়ে। ৯১ সালে জাতীয় নির্বাচনে বীর বাহাদুর এমপি হওয়ায় তারই একান্ত চেষ্টায় ধীরে ধীরে বম সম্প্রদায় আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হয়ে পড়ে। ২০১৮ সালে নাথান বম জাতীয় সংসদের প্র্রার্থী হতে চাইলে ১ শতাংশ সমর্থনের অভাবে তার প্রার্থীতা বাতিল হয়। দুষ্ট প্রকৃতির এই নাথান কে এন এফ নামে স্বাধীনতাকামী সংগঠনের বরাত দিয়ে গড়ে তুলেন সন্ত্রাসী সংগঠন।
আগামী ২২ এপ্রিল আবারো শান্তি আলোচনায় বসার কথা রয়েছে উভয় পক্ষের। আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য লয়েল ডেভিড বম দায়িত্বে থাকলেও এসব কিছুর পিছনে কে কলকাঠি নাড়ছে তাও বোঝার বিষয়। কেননা শান্তি চুক্তির বিধান অনুযায়ী যে সকল সম্প্রদায় হতে আঞ্চলিক পরিষদের প্রতিনিধিত্ব রয়েছে তারা শান্তি প্রক্রিয়া মেনে চলার অঙ্গিকার নিয়ে সদস্য অন্তর্ভূক্ত হয়েছেন।
তবে বম সোশাল কাউন্সিলের সভাপতি লাল জার লম এবং বম স্টুডেন্ট কাউন্সিলের নেতৃত্বে শান্তি প্রক্রিয়া সফল হবে ধারণা করা যায়।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.