মধুপুরে বৃদ্ধ মা, তাঁর দুই ছেলে ও এক ছেলের স্ত্রীকে গাছে বেঁধে নির্যাতন

মধুপুর প্রতিনিধি
টাঙ্গাইলের মধুপুরে বৃদ্ধ মা, তাঁর দুই ছেলে ও এক ছেলের স্ত্রীকে গাছে বেঁধে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে জাতীয় জরুরি সেবার হটলাইন নম্বর ৯৯৯-এ কল দেন তাঁদের স্বজনেরা। এরপর মধুপুর থানা থেকে পুলিশের একটি দল গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে মধুপুর পৌর এলাকার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের পুন্ডুরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় থানায় অভিযোগ করা হলেও পুলিশ মামলা নেয়নি। যদিও পুলিশ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
মধুপুরে নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিরা হলেন পুন্ডুরা গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের স্ত্রী শাফিয়া বেগম (৫৫), বড় ছেলে আলমগীর হোসেন, ছোট ছেলে জুব্বার আলী ও আলমগীরের স্ত্রী জ্যোৎস্না বেগম। তাঁদের মধ্যে আলমগীর চিকিৎসাধীন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন শাশুড়ি ও পুত্রবধূ। এরপর পৃষ্ঠা ২ কলাম ১ মা, ছেলেসহ এদিকে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. হেলাল উদ্দিন বলেন, শাফিয়া বেগম ও জ্যোৎস্না বেগমের অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। আলমগীর হোসেনকে উন্নত চিকিৎসার ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। হামলার শিকার ব্যক্তিদের পরিবার সূত্রে জানা যায়, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের লোকজন তাঁদের ওপর এই নির্যাতন চালান। প্রতিপক্ষ প্রভাবশালী হওয়ায় স্থানীয়রা উদ্ধারে এগিয়ে আসেনি এবং থানা মামলা নেয়নি।

এলাকাবাসী জানায়, আলমগীর ও জুব্বার মিয়ার সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে প্রতিবেশী মৃত আবু সেখের ছেলে কালু মিয়া সেখ ও তাঁর ভাইদের। ২৩ বছর বাঁটোয়ারা মামলা চলার পর চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি আলমগীর ও জুব্বারের পক্ষে আদালতের রায় যায়। কয়েক মাস আগে প্রতিপক্ষ কালু মিয়া প্রেমাতার ভাই আখিরাত্মালী ও সামাদ মিয়া ওই জমির মালিকানা দাবি করে আদালতের ১৪৪ ধারা জারি চেয়ে আবেদন করেন। স্থানীয় সংশ্লিষ্ট বিভাগের তদন্ত রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে ১৪৪ ধারা জারি করেন আদালত। এ নিয়ে এক সপ্তাহ ধরে দুই পরিবারের উত্তেজনা চলছিল।
এলাকাবাসী জানান, গতকাল সকালে কালু মিয়ারা জমিতে গিয়ে ঘর নির্মাণ শুরু করেন। তখন আলমগীর ও জুব্বাররা বাধা দিলে তাঁদের প্রথমে পিটিয়ে এবং এরপর গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করা হয়। পরে তাঁদের মা শাফিয়া বেগম সেখানে গেলে প্রতিপক্ষের লোকজন তাঁকেও বেঁধে ফেলেন গাছে। পুত্রবধূ জ্যোৎস্নাকেও হাত-পা বেঁধে বসিয়ে রাখা হয়। মধুপুর থানার ওসি মোল্লা আজিজুর রহমান বলেন, ৯৯৯ থেকে কল পেয়ে তাঁর থানা থেকে একটি দল ওই ব্যক্তিদের উদ্ধার করে। পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেছেন, ওই চারজন বাঁধা অবস্থায় ছিল। এ ঘটনায় কেউ লিখিত অভিযোগ না দেওয়ায় মামলা হয়নি। যুবক জুব্বার আলীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছে। গতকাল টাঙ্গাইলের মধুপুর পৌর এলাকার পুন্ডুরা গ্রামে।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.