Latest posts by সম্পাদনা: এস.এম আব্দুর রাজ্জাক (see all)
- যমুনা সারকারখানা চালুর দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচী - September 18, 2024
- হিন্দু সম্প্রদায়ের শারদীয় দূর্গাপুজা শান্তিপূর্ণ ভাবে উদযাপন উপলক্ষে মতবিনিময় সভা - September 18, 2024
- জনহয়রানি মূলক কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকতে ওয়ার্ড বিএনপি’র মতবিনিময় সভা - September 16, 2024
সাইফুল ইসলাম: বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি:
বান্দরবান পার্বত্য জেলায় বিভিন্ন নামে যেসব গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে, তাদের মধ্যে আদর্শিক দ্বন্দ্বের চেয়ে আধিপত্য বিস্তার এবং চাঁদাবাজীর ভাগ বাটোয়ারার বিষয়টিই প্রধান। সেজন্যই আধিপত্য বিস্তার ও এলাকার নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য প্রায়শই তাদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে।
পার্বত্য চট্টগ্রামের জনৈক মানবাধিকার কর্মী বলছেন, ‘’আদর্শিক দ্বন্দ্ব তেমন কিছু নেই। মূল বিষয়টা হচ্ছে আধিপত্য বিস্তার এবং চাঁদাবাজি। আমি একটা হিসাবে দেখেছি, বিভিন্ন গ্রুপ কর্তৃক বছরে সাতশো কোটি টাকারও বেশি চাঁদাবাজি করা হয়। এই অবারিত চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রণ নেয়ার জন্যই বেশি সহিংসতার ঘটনা ঘটছে”।
তিনি আরও বলেন, ‘’পার্বত্য চট্টগ্রামকে অনেক সময় বিভিন্ন মহল থেকে একটা বাফার জোন হিসাবে গড়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে। ফলে ভূ-রাজনৈতিক কারণে এই এলাকার সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে বিভিন্ন মহল, বিভিন্ন দেশ সহায়তা করেছে”।
গত কয়েক মাসে পার্বত্য জেলাগুলোতে একাধিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। কোন কোন মহল বিশেষ করে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক মহল এই এলাকাটিকে অশান্ত রাখার জন্য বা অস্থির করে তোলার জন্য সবসময় একটা অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। ইদানীং বেশি সহিংসতার ঘটনা ঘটছে, অতীতেও যে ঘটেনি তা নয়, কিন্তু সেনাবাহিনীর কারণে তা অনেক কমে গিয়েছিল। সেটাকে যারা পছন্দ করছে না, তারা আবার মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। বিশ্লেষক এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা মনে করছেন, অব্যাহত সহিংসতার কারণে পার্বত্য এলাকায় নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
সহিংসতার প্রভাব পড়ছে পাহাড়ি এলাকাগুলো ব্যবসা-বাণিজ্যে, পর্যটন শিল্পে এবং কৃষিজাত পণ্যসহ প্রতিটি খাতে।
এ অবস্থা দীর্ঘায়িত হলে এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সীমিত হয়ে পড়ার আশংকা তৈরি হতে পারে। একই সাথে পর্যটনের ব্যবসা কমে যাওয়া এবং সীমান্ত সড়কের যেসব কাজ চলমান ছিল, সেগুলোও স্থবির হয়ে যেতে পারে বলে আশংকা করছেন অনেকেই।
পাহাড়ে নানা পক্ষ, বহু গোষ্ঠী ১৯৯৭ সালে যখন বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনসংহতি সমিতির শান্তি চুক্তি হয়, তখন তারা প্রকাশে বিরোধিতা করেছিল। পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি স্থাপিত হোক, একটা মহল সেটা মেনে নিতে পারছে না। তারা মনে করে, তাহলে তাদের যে আধিপত্য এখানে আছে, সেটা ক্ষুণ্ণ হবে। এজন্যই বিভিন্ন সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী (কেএনএফ সহ অন্যান্য) সৃষ্টি করা হয়েছে। আজকে সেই কেএনএফ সহ অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো এই এলাকার অশান্তির প্রধান কারণ হয়েছে।
২০১৭ সালে ইউপিডিএফ ভেঙ্গে নতুন করে ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) নামে আরেকটি দল তৈরি হয়। অন্যদিকে, জনসংহতি সমিতি ভেঙ্গে জেএসএস (এমএন লারমা) নামে আগেই আরেকটি দল তৈরি হয়েছিল। পাহাড়ি এলাকায় এই চারটি গোষ্ঠীর মধ্যে অব্যাহত সংঘাত লেগেই রয়েছে। গত পাঁচ বছরে এসব গোষ্ঠীর সংঘর্ষে শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের নেতৃবৃন্দের অভিমত, “অবিলম্বে সরকারের উচিৎ অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টিকারী রাষ্ট্র দ্রোহীদের দমনে যৌথ বাহিনীর অভিযান অব্যাহত রেখে সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করে জনগণের জানমাল ও রাষ্টীয় সার্বভৌমত্বের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা”।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.