“সড়ক ও জনপথ বিভাগের নিরব ভুমিকা” জাফলং-তামাবিলে সওজ’র জমি দখল করে পাথরের ডাম্পিং অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ

 

মো.দুলাল হোসেন রাজু, গোয়াইনঘাট (সিলেট)প্রতিনিধি,
সিলেটের গোয়াইনঘাটের জাফলং তামাবিল শুল্ক স্টেশন এলাকা সংলগ্ন সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের, সড়ক ও জনপথ বিভাগের জায়গা দখল করে অবৈধ ভাবে কয়লা ও পাথর রাখার ডাম্পিং ইয়ার্ড-স্থায়ী স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) ও বন বিভাগের কয়েক কোটি টাকার সরকারী ভুমি বেদখল হচ্ছে।কয়লা ও এলসির ভ্ঙ্গাা পাথর খেকে সৃষ্ট পাথর কণা ধুলুর রাজ্যে পরিনত হচ্ছে। এতে পরিবেশ মারাতœক হুমকির মুখে রয়েছে। স্থানীদের অভিযোগ ,সড়ক ও জনপথ বিভাগ,এবং বন বিভাগের কর্মকর্তাদের যোগ সাজসে সওজ ও বন বিভাগের জায়গা দখলের হরিলুট করা হচ্ছে।

 

এ যেন দেখার কেউ নেই।অভিযোগ রয়েছে সীমান্তে ৭শ ৫০ মিটার বাংলাদেশের অভ্যান্তরে ভারতীয় কয়লা ও পাথরবাহী ট্রাক প্রবেশ,ও অনুমতি থাকলেও রহস্যজনক কারণে তা নির্দিষ্ট সীমারেখা অতিক্রম করে প্রায় ১ হাজার মিটার অভ্যান্তরে প্রবেশ করে জন সাধারণের চলাচলের রাস্তার মাঝে পাথর ও কয়লা লোড আনলোড করা হচ্ছে ফলে মহাসড়কে যানচলাচলে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টির কারণে বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা।

 

এক্ষেত্রে তামাবিল কাষ্টমস কর্মকর্তাদের ভূমিকা নিয়ে রয়েছে নানা প্রশ্ন।জানা গেছে, দীর্ঘ দিন থেকে জন গুরুত্বপূর্ন সড়ক সিলেট তামাবিল মহাসড়কের দু’পাশে নামে বেনামে পাথর রাখার ডাম্পিং ইয়ার্ড তৈরী করে অনেকেই বনে গেছেন কুটি কুটি টাকার মালিক।তবে ব্যাস্ততম রাস্তা সিলেট তামাবিল মহাসড়কের মাঝে এলোপাথারী ভাবে ফেলুডার দিয়ে ট্রাকে পাথর লোডআনলোডের কারণে এলাকাটিতে সড়ক দুর্ঘটনা দিনদিন বেড়েই চলছে।

 

এব্যাপারে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সংশ্লি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে জাফলংয়ের সংরক্ষিত সামাজিক বনাঞ্চল ধ্বংস করে ডাম্পিং ইয়ার্ড তৈরী করেও ক্ষ্যান্ত হয়নি,এখন সড়ক ও জনপথ বিভাগের জায়গা দখল করে নির্মাণ করা হচ্ছে অবৈধ স্থাপনা ও পাথর রাখার ডাম্পিং ইর্য়াড। সড়কের জায়গায় গড়ে উঠছে অসংখ্য অবৈধ স্থাপনা,এসব স্থাপনা নির্মাণে জাফলংয়ের পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। অন্যদিকে মহাসড়কে মালামাল লোডআনলোড করার কারণে যানযটের কবলে পড়ে যাত্রী সাধারণের নিয়মিত দূর্ভোগ বাড়ছে।

 

 

আবার অনেকের বিরুদ্ধে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের জমি দখল করে বসতবাড়ী,দোকানপাট,ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানের অফিস নির্মাণ করারও রয়েছে বিস্তর অভিযোগ।এব্যাপারে তামাবিল চুনা পাথর ও কয়লা আমদানীকারক গ্রুপের সভাপতি এম.লিয়াকত আলী ও সাধারণ সম্পাদক মো.সরওয়ার হোসেন ছেদু বলেন,সিলেট-তামাবিল মহা সড়কের পাশের জায়গা সড়ক ও জনপথ বিভাগের তবে কিছু অংশ বন বিভাগের জায়গায় কিছু সংখ্যক ব্যাবসায়ী সড়কের জায়গায় ডাম্পিং ইয়ার্ড ও অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করে কয়লা ও পাথর ব্যবসায়ীরা সাইনবোর্ড ব্যবহার করে সড়কের উপর ভারতীয় ট্রাক দিয়ে কয়লা ও এসির ভাঙ্গা পাথর লোড আনলোড করছে,এতে করে যানজটের সৃষ্টি হয়ে যাত্রীবাহী বাস ঘন্টার পর ঘন্টা জ্যামে আটকা পড়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত পর্যটকদের পড়তে নানা ভুগান্তিতে।

 

 

সড়কের নিয়ম নীতি অপেক্ষা করে সড়কের মাঝে ট্রাক এ্যালোপাথারী ভাবে ফেলুডার দিয়ে ডাম্পিংয়ের পাথর লোড-আনলোড করার কারণে সড়ক দুর্ঘটনার মতো মারাতœক দূর্ঘটনার শিকার হচ্ছে জনসাধারণ। তিনি আরো বলেন,ইতোমধ্যে আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে সড়কের জায়গা থেকে ডাম্পিংয়ের পাথর ও অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য আমরা মাইকিং করে ঘোষণা দিয়েছি।অতি শীঘ্রই সড়কের জমি খালি করে দিবে। এব্যাপারে সিলেটের সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.মুস্তাফিজুর রহমান জানান,সড়কের জায়গা দখল করলে জেল জরিমানার বিধান রয়েছে। অনুমতি ছাড়া বিলবোর্ড,সাইনবোর্ড-স্থাপন করা জাবেনা।

 

 

সড়কের জমিতে মাটি উত্তোলন করলে জেলসহ ১০লাখ টাকা অর্থদন্ডের বিধান রয়েছে।জৈন্তাপুর থেকে জাফলং পর্যন্ত মহাসড়কের দু’পাশে সড়ক ও জনপথ বিভাগের সরকারী জমি দখল করে অবৈধ স্থাপনা এবং তামাবিল স্থলবন্ধর সংলগ্ন স্থানে পাথার রাখার ডাম্পিং ইর্য়াড নির্মাণ করে মাসিক বাড়া বাবদ লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন একটি দখলদার চক্রের সদস্যরা। বিষয়টি আমি শুনেছি।জেলা প্রশাসকের সাথে আলোচনা করে অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে নোটিশ প্রদান করে পরবর্তীতে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের মাধ্যমে ম্যাজিস্টেট্যাট নিয়োগ করে ভ্রাম্যম্যান আদালত পরিচালনা করে অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।

 

 

অপর একটি সূত্র বলছে, গড়ে তোলা এসব অবৈধ ডাম্পিং ইর্য়াড ও দোকান-পাট থেকে মাসিক ভাড়া বাবদ লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন প্রভাবশালী চক্রের সঙ্গব্ধ সদস্যরা। সড়কের দু’পাশজুরে নির্মাণ করা হয়েছে ডাম্পিং ইর্য়াড়,রয়েছে স্থায়ী ও অস্থায়ী অবৈধ স্থাপনা। তবে স্থায়ী স্থাপনাই বেশী,ডাম্পিংয়ে পাথর রাখার কাজে ব্যাবহূত প্রতি শতক জমি মাসিক ৫০ হাজার দোকান কিংবা ব্যাবসায়ী অফিস হতে ৩-৭ হাজার টাকা মাসিক ভাড়া আদায় করছে চক্রটি।

 

 

দিন দিন দখলের মাত্রা বাড়লেও এসব ডাম্পিং ইর্য়াড ও অবৈধ স্থাপনা নির্মাণে জরিতদের তালিকা নেই সড়ক ও জনপথ বিভাগের হাতে। অবৈধ স্থাপনা ও ডাম্পিং ইর্য়াড উচ্ছেদে নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী এমনকি ম্যাজিস্ট্রেটও নেই সড়ক বিভাগের অধীনে। ১/১১ সময় এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে সরকার ।উচ্ছেদ অভিযানের পর কয়েক মাস বন্ধ থাকলেও আবারও গড়ে উঠে সড়কের দু’পাশে অবৈধ স্থাপনা ও পাথর রাখার ডাম্পিং ইর্য়াড।সিলেট তামাবিল মহাসড়কের পাশে সরকারি জমিতে অবৈধ স্থাপনা ও পাথর রাখার ডাম্পিং ইর্য়াড উচ্ছেদ করে দখলদার মুক্ত করবে সরকার এমনটাই প্রত্যাশা জন সাধারণের।

 

 

ছবির ক্যাপশনঃ ১.সিলেট তামাবিল মহাসড়কের জমি দখল করে সড়কের মাঝে ফেলুডার দিয়ে এ্যালোপাথারী ট্রাকে ডাম্পিংয়ের পাথর লোড আনলেড করা হচ্ছে।
২.বাংলাদেশের ৭শ ৫০ মিটার অভ্যন্তরে ভারতীয় ট্রাক প্রবেশ করার জন্য সাইনবোর্ড টাঙ্গানো থাকলেও কেউ মানছেনা এই নিয়ম।
৩.সিলেট তামাবিল মহাসড়কে ডাম্পিংয়ে জমাকৃত পাথর রাখা হয়েছে।

 

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.