ধনবাড়ীতে ঘুষের টাকা ফেরত চাওয়ায় গৃহবধূকে পেটালো মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সহকারি

ধনবাড়ী (টাংগাইল) প্রতিনিধি

টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ের প্রধান সহকারি আব্দুল রশিদের বিরুদ্ধে গৃহবধূকে কিলঘুষি মারার অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার দুপুরে উপজেলা অফিস কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। পরে আহত গৃহবধূকে দ্রুত উদ্ধার করে ধনবাড়ী উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ভুক্তভোগীরা অভিযুক্ত আব্দুর রশিদকে অফিসে কক্ষেই অবরোধ করে রাখে। সংবাদ পেয়ে ধনবাড়ী থানা পুলিশ অভিযুক্ত মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ের প্রধান সহকারি আব্দুল রশিদের পুলিশি হেফাজতে নেয়।

 

ভুক্তভোগী সুমাইয়া আক্তার লাভলী (২৩) ধোপাখালী ইউনিয়নের বিলপাড়া এলাকার মোবারক হোসেনের স্ত্রী। ঘটনাটি আজ বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ পেলে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়।

 

ভুক্তভোগী বলেন, ‘আমাকে গর্ভবতী কার্ড দেওয়ার কথা বলে একই ইউনিয়নের নরিল্যা গ্রামের মিনা আক্তারের মাধ্যমে ৬ হাজার টাকা নেয়। এছাড়া আব্দুর রশিদ গর্ভবতী কার্ড, শিশু ভাতা, চাউলের কার্ড ও ঘর দেওয়াসহ সরকারি নানা সুবিধা দিবে বলে আমাকে জানায়।’

 

তিনি আরও বলেন, ‘নরিল্ল্যা শাহপাড়া এলাকার প্রায় ৩০/৩৫ জন নারীর কাছ থেকে প্রায় দেড় লাখ টাকা আব্দুর রশিদকে ওঠিয়ে দেয় মিনা আক্তার। পরে কার্ড চাইতে গেলে কালক্ষেপণ করা শুরু করে আব্দুর রশিদ। গতকাল বুধবার দুপুরে সকল ভুক্তভোগীরা ওই অফিস ঘেরা করে। এ সময় আব্দুর রশিদ ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে কিল-ঘুষি মারতে থাকে। পরে আমি অফিস কক্ষেই জ্ঞান হারিয়ে ফেললে অন্যরা উদ্ধার করে উপজেলা হাসপাতলে ভর্তি করে। আমি মাথায় প্রচণ্ড আঘাত পেয়েছি।’

 

নরিল্ল্যাহ শাহপাড়া এলাকার ভুক্তভোগী রুমি আক্তার, নাসিমা বেগম, কহিনুর, শাহানাজ বেগম, সাবিনাসহ আরও অনেকেই বলেন, ‘৩০ থেকে ৩৫ জন নারীর থেকে ৩ থেকে ৭ হাজার টাকা করে প্রায় দেড় লাখ টাকা নিয়েছে আব্দুর রশিদ। লাভলীকে মাথায় কিল-ঘুষি মেরে গুরুতর আহত করছেন তিনি। আমরা এ ঘটনার বিচাই চাই।’

 

উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মো. শওকত হোসেন বলেন, ‘এটা কোনো অফিসের আর্থিক বিষয় নয়। এটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। তবে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ তাকে হেফাজতে নিয়েছে।’

 

অভিযুক্ত আব্দুর রশিদ অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, ‘আমার বিরুদ্দে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে। আমি আসলে এভাবে টাকা পয়সা নেই নাই। কে বা কারা আমার নাম ভাঙিয়ে টাকা পয়সা নিয়েছে। আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না।’

ধনবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এইচএম জসিম উদ্দিন বলেন, ‘সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে আব্দুর রশিদকে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।’

 

গৃহবধূকে মারধরের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আসলাম হোসাইন বলেন, ‘আমি একটি মিটিংয়ে যোগ দিয়েছিলাম। বিষয়টি জানা নেই। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

 

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.