জৈন্তাপুরে পৃষ্ঠপোষকতার অভাব আর বৈরী আবওহাওয়ার কারণে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির খাসিয়া পল্লীতে কমে যাচ্ছে পানের উৎপাদন

 

মো.দুলাল হোসেন রাজু, জৈন্তা-গোয়াইনঘাট (সিলেট)প্রতিনিধি,

সিলেটে পৃষ্ঠ পোষকতার অভাব আর বৈরী আবওহাওয়ার কারণে জাফলংয়ের নকশিয়াপুঞ্জি ও জৈন্তাপুরের মোকামপুঞ্জির খাসিয়া পল্লীতে কমে যাচ্ছে পানের উৎপাদন। এছাড়া পানের বাজার দামও ভাল না,তাই লোকশান গুনতে হচ্ছে তাদের।ফলে পূর্ব পুরুষের এ পেশা থেকে দিন দিন সরে আসছে জাফলং ও মোকামপুঞ্জির পান চাষীরা।

 

হারাচ্ছেন পান চাষের আগ্রহ ফলে খাসিয়া সম্প্রদায়ের পান চাষ বিলুপ্তির পথে।এজন্য সরকারের সহয়তা কামনা করছেন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির লোকজন।কোন এক সময় জাফলংয়ের নকশিয়াপুঞ্জি ও জৈন্তার মোকামপুঞ্জির খাসিয়া পল্লীর পান-সুপারির বেশ কদর ছিল,পান-সুপারি চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করতো খাশিয়া পল্লীর ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির লোকজনেরা।এখন আর আগের সুদিন নেই খাসিয়া পল্লীর পান চাষীদের।

 

প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতার অভাব আর বৈরী আবওহাওয়ার কারণে এ অঞ্চলে ধীরে-ধীরে কমে যাচ্ছে পান বরজের সংখ্যা।এছড়া পানের বাজার দরও ভাল না,ন্যায্য দাম না পাওয়ায় লোকশানের মূখে পড়ছে নকশিয়া ও মোকামপুঞ্জির চাষীরা।কোন রকমে খুঁিড়য়ে খুঁিড়য়ে চলছে তাদের সংসার। তাই পান চাষে আগের সুদিন ফিরে পেতে সরকারের সহযোগিতা চান খাসিয়া পল্লীর ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির লোকজন। পাশা-পাশি পানের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করার দাবিও তাদের। মূলত: পান চাষের জন্য।

 

পর্যাপ্ত পানির প্রয়োজন থাকলেও নেই কোন সেচ ব্যবস্থা। কোন এক সময় গোয়াইনঘাট উপজেলার নকশিয়াপুঞ্জি- জৈন্তাপুরের মোকামপুঞ্জি’র খাসিয়া পল্লীর পাহাড়ী ভুমিতে ব্যাপক আকারে পানের জুম করা হতো। কালের বির্বতনের ফলে পান চাষ এখন অনেকটাই বিলপ্তির পথে।

 

খাসিয়াদের পান জুম বিলুপ্তির ব্যাপারে জানতে চাইলে মোকামপুঞ্জির আদিবাসী খাসিয়া দেবেনশন জানান, তৎকালীন সময়ে তাদের উৎপাদিত পান দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানী করা যেত।

 

এখন আর সেই দিন নেই। নানাবিদ কারণে পান চাষে তাদের লোকশান হচ্ছে। তাই খাসিয়া পল্লীগুলোতে পানের উৎপাদন দিন দিন কমে যাচ্ছে। জাফলংয়ের নকশিয়াপুঞ্জি-জৈন্তাপুরের মোকামপুঞ্জি খাসিয়া আদিবাসী পল্লীতে শতাধিক খাসিয়া লোকজনের বসবাস। লোকশানের কারণে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির লোকজন পান চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে। এছাড়াও মোকামপুঞ্জির খাসিয়া পল্লীতে রয়েছে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট।

 

 

পুঞ্জি থেকে প্রায় এক কি:মি দূরে পাহাড়ের নির্ঝন গর্তের ঝর্ণা ও একটি ইর্ন্দ্রা রয়েছে তাও আবার অকেজু অবস্থায়। তাদের পানির চাহিদা পূরনের জন্য এখানের পানি দিয়ে গোসলসহ যাবতীয় কাজ করে থাকেন। শুকনো মৌসুমে এখানের পানি শুকিয়ে যায়। ফলে খাসিয়া পল্লীর আদিবাসীদের সীমাহীন দূর্ভোগ পোহাতে হয়।

 

 

পান চাষের জন্য কীটনাশক ঔষুধ ও পানি সেচের প্রয়োজন রয়েছে। সেচের অভাবে রোপনকৃত পানের বরজের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এতে করে পান চাষে তাদের লোকশান হয় অনেক বেশী। জুম চাষে লোকশানের কারণে তাদের পূর্ব পুরুষদের পেশা, পান চাষ থেকে এখন অনেকেই সরে যাচ্ছে ।

 

 

 

তবে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন,সরকারী সহযোগিতায় মোকামপুঞ্জির খাসিয়া পল্লীতে বিশুদ্ধ পানি ও পান চাষের জন্য সেচ প্রকল্পের ব্যবস্থা করলে,ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির লোকজন পুনরায় পান চাষ করে জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ন অবদান রাখতে সক্ষম হবে।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.