টাঙ্গাইলে ঘুষ লেনদেন নিয়ে আদালত চত্বরে হাতাহাতি,থানায় মামলা

টাঙ্গাইলের আদালত চত্ত্বরে ঘুষের টাকা লেনদেন নিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ও আইনজীবী সহকারীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনায় উভয় পক্ষে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

 

ওই ঘটনায় চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পক্ষে জারীকারক মোঃ আজিজুল হক বাদি হয়ে সদর থানায় মামলা দায়ের করেছেন এবং আইনজীবী সহকারী সমিতির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মির্জা কামাল হোসেন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি-সম্পাদকের নিকট প্রতিকার চেয়ে আবেদন করেন।অভিযোগে প্রকাশ, গত বৃহস্পতিবার(২৩ জুন) টাঙ্গাইল চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মোঃ রাসেল মিয়া নামে একজন আইনজীবী সহকারী ‘এফিডেভিট’ দাখিল করতে গেলে আদালতের জারীকারক মো. আজিজুল হক ৫০০ টাকা ঘুষ দাবি করেন। ওই ঘুষের টাকা দিতে অস্বীকার করায় তিনি আইনজীবী সহকারীর উপর ক্ষুব্ধ হয়ে গালিগালাজ করেন। খবর পেয়ে আইনজীবী সহকারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আরিফ হোসাইন সহ অন্যান্য সদস্যরা ঘটনাস্থলে গেলে আদালতের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের সাথে তাদের বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের জারীকারক মোঃ আজিজুল হক বাদি হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় আইনজীবী সহকারী  সমিতির সাধারণ সম্পাদক আরিফ হোসাইন সহ ১২ জনের নামোল্লেখ ও ১০-১২জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের অভিযুক্ত করা হয়। একই ঘটনায় আইনজীবী সহকারী সমিতির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মির্জা কামাল হোসেন প্রতিকার চেয়ে টাঙ্গাইল জেলা অ্যাডভোকেট বার সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে আবেদন করেছেন।

 

টাঙ্গাইল জেলা আইনজীবী সহকারী সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ জামাল উদ্দিন মিঞা, সাবেক সভাপতি মোঃ মনিরুজ্জামান বুলবুল, মোঃ নুরুল হক নুরু, ফরহাদ হোসেন, শফিকুল ইসলাম সোনা, মান্নান সিকদার, আব্দুস ছালাম, সদস্য রাসেদুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর হোসেন, টিপু মিয়া সহ অনেকেই জানান, টাঙ্গাইলের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ঘুষ ছাড়া কোন কাজই হয়না। এফিডেভিট করতে আবেদনকারীর কাছ থেকে ৫০০ টাকা নেওয়া হয়। আইনজীবী সহকারীদের কাছ থেকে ২০০ টাকা নেওয়ার রেওয়াজ রয়েছে। তারা আরও জানান, একটি মামলায় আদালত কর্তৃক সমন জারির আদেশ হলে জারীকারক দুই হাজার টাকা দাবি করেন। টাকা না দেওয়ায় সময় মতো সমন জারি করা হয়না। সেখান থেকেই মূলত ঘটনার সূত্রপাত।

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আইনজীবী বলেন, আসামির জামিন নামায় টাকা না দিলে সময়মত জামিন নামা কারাগারে প্রেরণ করেন না।
আদালতের জারীকারক ও মামলার বাদি মো. আজিজুল হক জানান, তার পাশের কক্ষে আইনজীবী সহকারীদের সাথে তর্কবিতর্কের শব্দ পেয়ে তিনি এগিয়ে গেলে মারপিটের শিকার হন এবং আইনজীবী সহকারীরা আদালতের দরজায় লাথি মারেন।

 

 

তাই তিনি থানায় মামলা দায়ের করেছেন।টাঙ্গাইল জেলা অ্যাডভোকেট বার সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ কবীর হোসেন উজ্জল জানান, বিষয়টি নিয়ে আবেদন পেয়েছি। সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এ বিষয়ে টাঙ্গাইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মীর মোশাররফ হোসেন জানান, মামলা দ্বায়ের হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.