জুস খাইয়ে অজ্ঞান করে লুট, নারীসহ গ্রেপ্তার ৩

নিজস্ব প্রতিবেদক

জুস খাইয়ে অজ্ঞান করে অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলসহ সর্বস্ব লুটে নেয়ার অভিযোগে দুই নারীসহ অজ্ঞান পার্টির তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

রংপুরের মিঠাপুকুর থানা পুলিশের চালানো এই অভিযানে উদ্ধার করা হয়েছে দুটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, একটি মোটরসাইকেল, সাতটি মোবাইল ফোন ও নগদ ৫০ হাজার টাকা।

বৃহস্পতিবার অজ্ঞান পার্টি সদস্যদের গ্রেপ্তারের বিষয়টি ঢাকাটাইমসকে নিশ্চিত করেছেন মিঠাপুকুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) কামরুজ্জামান।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- চক্রের মূল হোতা ও বাহিনী প্রধান মো. নুর আলম ওরফে তারেক ওরফে সাগর ওরফে রানা, সাথী আক্তার সুমাইয়া এবং সাথী আক্তার সুমি।

এএসপি কামরুজ্জামান জানান, গত মাসের (মার্চ) ১২ তারিখে মিঠাপুকুর উপজেলার চতরা বাজার এলাকার অটোরিকশা চালক আ. রাজ্জাক থানায় একটি অভিযোগ করেন।

তিনি তার অভিযোগে জানান, গত ৮ মার্চ বেলা ১১টার দিকে অটোরিকশা নিয়ে চতরা বাজারে যান আ. রাজ্জাক। সেখানে যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন তিনি। এ সময় চারজন যাত্রী দিনাজপুরে যাওয়ার কথা বলে অটোটি ভাড়া নেয়। নবাবগঞ্জ পৌঁছার পর একটা হোটেলে গিয়ে খাওয়া-দাওয়া করেন।

সেখান থেকে ভেন্ডাবাড়ি গিয়ে সবাই জুস পান করেন। এ সময় কৌশলে আব্দুর রাজ্জাককে জুসের মধ্যে ঘুমের ওষুধ খাওয়ায়। চালক আব্দুর রাজ্জাক অজ্ঞান হয়ে পড়লে তাকে মিঠাপুকুর থানার রানীপুকুর এলাকায় ফেলে দিয়ে তার অটোটি নিয়ে যায় অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

অভিযোগের ভিত্তিতে চক্রটিকে ধরতে মাঠে নামে মিঠাপুকুর থানা পুলিশ। গতকাল সন্ধ্যায় একই কায়দায় ছিনতাইয়ের সময় চক্রের দুই নারী সদস্যকে ধরে ফেলে স্থানীয়রা। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

গ্রেপ্তার দুই নারীকে জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে দলের মূল হোতা নুর আলমের নাম। দুই নারীর দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে নুর আলমকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এছাড়া জব্দ করা হয় দুটি অটোরিকশা, একটি মোটরসাইকেল, সাতটি মোবাইল, নগদ ৫০ হাজার টাকা। এছাড়া চোরাই কাজে ব্যবহৃত চারটি রেঞ্জ, একটি পাইপ রেঞ্জ ও দুটি স্টার রেঞ্জ উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার তিনজন পুলিশকে জানিয়েছে, তারা একই গ্রুপের সদস্য। এই গ্রুপের মাস্টার মাইন্ড হচ্ছে নুর আলম। তারা প্রথমে যাত্রীবেশে অটোরিকশা বা মোটরসাইকেল ভাড়া করে। তারপর চালকের সঙ্গে সু-সম্পর্ক গড়ে তোলে।

সুযোগমতো জুসের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাওয়ায়। এতে চালক অচেতন হয়ে গেলে সুবিধামত জায়গায় ফেলে দিয়ে চালকের মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, মোবাইল, টাকাসহ সর্বস্ব নিয়ে সটকে পড়ে। পরে সেসব জিনিস হাসানুজ্জামান ওরফে হানিফ ওরফে কালুর কাছে জমা রাখে। হানিফ সেই যানের রং পরিবর্তন করে বিক্রি করতো। চক্রটি গত চার মাসে ১৬টি ঘটনা ঘটিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মিঠাপুকুর থানায় মামলা করা হয়েছে।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.