শ্যালিকার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক, বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে বন্ধুকে হত্যা করে দিলাভাই

খুলনার দৌলতপুরে আলোচিত আলী হোসেন মিঠু অপহরণ ও হত্যার রহস্য পাঁচ বছর পর উন্মোচন করল পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গত জানুয়ারি মাসে এজাহারভুক্ত ও সন্দেহভাজন তিন আসামিকে আটক করে সিআইডি। এ ঘটনায় গ্রেফতার তিনজন আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে মিঠুকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। শ্যালিকার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক মেনে নিতে না পেরে মিঠুকে খুনের পরিকল্পনা করে তার কথিত বন্ধু রিয়াজুল ইসলাম ওরফে আহাদ শেখ। ২০১৬ সালের ১৫ নভেম্বর মিঠুকে ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলায় নিয়ে গলায় রশি পেঁচিয়ে হত্যা করা হয়। এরপর লাশ বস্তায় ভরে ঝালকাঠির গাবখান সেতু থেকে ফেলে দেয়া হয়।

এ মামলায় গ্রেফতারকৃতরা হলেন- খুলনার রূপসা উপজেলার নৈহাটি ইউনিয়নের বাঘমারা গ্রামের রাশেদুল ইসলাম ও বাধাল গ্রামের মো. সুমন মল্লিক এবং ঝালকাঠির মেহেদী চৌধুরী ওরফে ইমরান। তারা তিনজনই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এর মধ্যে রাশেদুল ও সুমন জানুয়ারি মাসে এবং মেহেদী চৌধুরী ওরফে ইমরান সোমবার রাতে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।

আদালতকে আসামিরা জানায়, রিয়াজুল ইসলাম ওরফে আহাদ শেখের শ্যালিকার সঙ্গে প্রেমের গড়ে ওঠে আলী হোসেন মিঠুর। এ সম্পর্ক মেনে নিতে না পেরে মিঠুকে খুনের পরিকল্পনা করে তার আহাদ শেখ। আহাদ তার বন্ধু রাশেদুলকে দিয়ে ভিকটিম মিঠুর সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলে ২০১৬ সালের ১৫ নভেম্বর রাশেদুলের মোবাইল নম্বর দিয়ে মিঠুকে ফোন করে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে আহাদ। তারা মিঠুর বাড়িতে গিয়ে তার মোটরসাইকেলে করে ঝালকাঠির রাজাপুর যায়। আগে থেকে সেখানে অবস্থানরত সুমন মল্লিক ও মেহেদী চৌধুরীসহ চারজন মিলে গলায় রশি পেঁচিয়ে মিঠুকে হত্যা করে। এরপর লাশ বস্তায় ভরে ঝালকাঠির গাবখান সেতু থেকে ফেলে দেওয়া হয়। মিঠু আর ফিরে না আসায় ২৮ নভেম্বর তার বাবা এনামুল সিকদার রিপন বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় মামলা করেন। পরে রিয়াজুল ইসলাম ওরফে আহাদ শেখকে ২০১৬ সালে গ্রেফতার করেছিল র‌্যাব। এরপর জামিন নিয়ে তিনি পালিয়ে যান।

সিআইডির ওসি মোছা. মাহমুদা খাতুন জানান, রিয়াজুল ইসলাম আহাদ শেখের শ্যালিকা লিমার সঙ্গে ভিকটিম আলী হোসেন মিঠুর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। আহাদ তা মেনে নিতে পারেনি। সে মিঠুকে লিমার সঙ্গে মেলামেশা করতে নিষেধ করেছিল। কিন্তু মিঠু তা না শোনায় তাকে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয় বলে আদালতে মামলার আসামিরা জানিয়েছেন।

খুলনা জেলা সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান জানান, মিঠু হত্যার তদন্তে নেমে গত ৩ জানুয়ারি খুলনার বাগমারা এলাকা থেকে রাশেদুল ইসলাম (৩২) এবং ৫ জানুয়ারি খুলনার বাধাল এলাকা থেকে সুমন মল্লিক (৩৫) নামে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর ২৫ জানুয়ারি গ্রেফতার করা হয় মেহেদি চৌধুরী ইমরানকে (৩৪), ঝালকাঠি সরকারি কলেজের সামনে থেকে। হত্যার দায় স্বীকার করে সোমবার ইমরান আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এর আগে রাশেদুল ও সুমনও জবানবন্দি দেন।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.