বগুড়ার শেরপুরে ভেজাল শিশু খাদ‍্য তৈরীর কারখানার সন্ধান ॥ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে কোমলমতি শিশুরা

সেলিম রেজা, শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি ঃ বগুড়ার শেরপুর উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামে শিশুদের ভেজাল খাদ্য তৈরীর কারখানার সন্ধান পাওয়া গেছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, শাহবন্দেগী ইউনিয়নের ধড়মোকাম এলাকার মামুন কৃষ্ণপুর গ্রামের মাওলানা আবু তাহেরের বাড়ির উত্তর পাশে অবস্থিত একই গ্রামের রুহল আমিনের বাসা ভাড়া নিয়ে জান্নাত ফুড প্রোডাক্টস নামে একটি শিশু খাদ্যের কারখানা খুলে দীর্ঘদিন যাবত ব‍্যবসা করে আসছে। বিএসটিআই এর অনুমোদনহীন শিশু খাদ‍্য তৈরী এই কারখানায় কেমিষ্ট ছাড়াই তৈরী হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের জুস, লিচু, ললিপপ যেগুলো কোমলমতি শিশুদের খুব প্রিয় খাবার বা অনেক অভিভাবগও অতি স্নেহে তাদের প্রিয় সন্তানদের কিনে দেন এসব খাদ্য, যার ফলে চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে বাড়ন্ত বয়সের এসব শিশু কিশোররা। এতেই যেন শেষ নয়, কেমিক্যালের মাধ্যমে সয়াবিন তৈল দিয়ে তৈরী করা হচ্ছে সরিষার তৈল। ভেজাল তৈরী এসব নকল পণ‍্যর তালিকায় রয়েছে ওলিভয়েল তৈল, হ্যান্ড ওয়াশ, ডিটারজেন্ট পাউডারসহ বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য।

অনুসন্ধান টিম আরও জানতে পারে ভেজাল তৈরী এসব নকল পণ‍্য অতি গোপনীয়তায় সন্ধ্যার পর হতে রাত্রি ১০টা পযর্ন্ত বিভিন্ন দোকানে সরবরাহ করে থাকে নকল এসব শিশু খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য। কারখানা স্থাপন করা বাড়িটি জঙ্গলের আড়ালে হওয়ায় খুব সহজে কারো দৃষ্টিতে আসেনা ফলে প্রশাসনের চোখে ধুলো দিয়ে আর অভিভাবকদের সঙ্গে প্রতারণা করে নকল ও ভেজাল পণ্যের জমজমাট ব‍্যাবসা করছে জান্নাত ফুড প্রোডাক্টসের মালিক মামুন। শুধু তাই নয় শিশুখাদ্য তৈরির এই কারখানায় অবাধে চলছে শিশু শ্রম, যা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ।

আমাদের অনুসন্ধানী টিম জান্নাত ফুড প্রডাক্টটসের মালিক মামুনের ব‍্যাবহিত মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে মামুন জানান প্রশাসনকে ম‍্যানেজ করেই আমি আমার ব‍্যবসা পরিচালনা করে আসছি। এখন কথা হচ্ছে ভেজাল মেশানোর খবর আর ভেজালবিরোধী অভিযান বাংলাদেশের একটি নৈমিত্তিক খবর। খাদ্য মানুষের জীবনধারণের এবং সুস্থতার জন্য প্রথম মৌলিক উপাদান। আর এ খাদ্যই যখন জীবনকে নানা ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেয় তখন মানব সভ্যতার সার্বিক অর্জনই বিস্বাদে পরিণত হয় যাকে বিপন্ন মানবতা বলা যায়। ভেজাল খাদ্যের সর্বব্যাপী বিস্তারে দেশের সর্বস্তরের মানুষই যে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে তা নানা জটিল রোগের প্রাদুর্ভাবই প্রমাণ করে। খাদ্যের ভেজাল প্রতিরোধে সরকার এবং জনসাধারণ যে নানাভাবে তৎপর সেটা অনুধাবন করা যায় নিত্য সভা-সমাবেশ, নতুন নতুন আইন এবং আইন প্রয়োগের নানা অভিযানে। দুঃখের বিষয় এসবের পরও খাদ্যের ভেজাল এবং বিষ প্রয়োগ থেমে নেই। ভেজালকারী চক্র আবিষ্কার ফাঁকি দিয়ে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বাজারজাতের মাধ্যমে ভেজাল পণ্য ভোক্তার আহারের উপকরণ হচ্ছে। ফলশ্রুতিতে শিকার হচ্ছে নানা দুরারোগ্য রোগের।

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিয়াকত আলী সেখ এই প্রতিবেদককে জানান, এরকম কোন ঘটনা আমার জানা নেই তবে এ রকম ঘটনা যদি কেউ ঘটিয়ে থাকে তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.