ইজ্জতের মূল্য ৬৫ হাজার,মাতব্বররা নিলো ৬০, ধর্ষণের শিকার নারী পেলো মাত্র পাঁচ হাজার

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি হাসপাতালে রোগী দেখতে এসে দুই সন্তানের জননী এক গৃহবধূ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। ধর্ষণের বিষয়টি ধামাচাপা দিতে শালিসের আয়োজন করা হয়। শালিশে দুই ধর্ষককে ৬৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হলেও ধর্ষিতাকে দেয়া হয় মাত্র পাঁচ হাজার টাকা। এ বিষয়ে বালিয়াকান্দি থানার অফিসার ইনচার্জ তারিকুজ্জামান বলেন, থানায় কোনও অভিযোগ করেনি কেউ। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিষয়টি জানতে, অভিযুক্ত আজিবর রহমানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথমে ফোনও রিসিভ করলে পরিচয় জানার পর কেটে দেয়।

এ বিষয়ে উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের সাবেক এক সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য বলেন, তার প্রতিবন্ধী মেয়ে অসুস্থ হওয়ার কারণে বালিয়াকান্দি হাসপাতালে ভর্তি করেন। অসুস্থতার কথা শুনে গত শুক্রবার তার মেয়েকে দেখতে আসে তার আত্মীয় মধুখালী উপজেলার দুই সন্তানের জননী এক গৃহবধূ। সে হাসপাতালেই অবস্থান করে। পরে রাত ১২টার হাসপাতালের বাইরে টিউবয়েলে পানি আনতে গেলে হাসপাতাল গেইটের মুদি দোকানি তাকে দোকানের মধ্যে বসতে বলে।

একপর্যায়ে বিভিন্ন ধরনের কথা বলে দোকানের মধ্যেই তাকে ধর্ষণ করে। সে ছাড়াও পাশের আরেক দোকানি মিলে দুইবার ওই গৃহবধূকে ধর্ষণ করে। প্রায় ঘণ্টাখানেক পর এসে তিনি আমাকে ধর্ষণের বিষয়টি জানালে, আমি ওই দোকানিদের কাছে গিয়ে বিষয়টি জানতে চাইলে তারা ভুল স্বীকার করে।আমি মানসম্মান ও ইজ্জতের ভয়ে ওই গৃহবধূকে শনিবার ভোরে বাড়ি পাঠিয়ে দিলে পথে তাকে পুনরায় ওই দুই দোকানি মিলে বালিয়াকান্দি বাজারের চন্দনা ব্রিজের ওপর তাকে ধরে হেনস্থা করে।

তখন ওই মহিলা আমাকে ফোন দিলে আমি সেখানে গিয়ে তাদের কবল থেকে তাকে উদ্ধার করে ভ্যান ঠিক করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেই। তারপর থেকেই বিভিন্ন লোকজন বিষয়টি টের পায়। এ নিয়ে শনিবার রাতে স্থানীয়দের সমন্বয়ে এক শালিসী বৈঠক হয়। ওই শালিসে ৬৫ হাজার টাকা জরিমানা করে। তবে ওই মেয়েকে পাঁচ হাজার টাকা দিয়েছে। গতকাল রোববার রাতে হাসপাতাল থেকে আমার মেয়ের নাম কেটে দিলে তাকে বাড়িতে নিয়ে যাই।

আমাকে এখন বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদর্শন করছে।থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের করেনি। তিনি আরও বলেন, ওই গৃহবধূ উল্টো আমাকেই নানা ধরনের কথা বলছে, সে কোথায় আছে তাও বলছে না। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের কথা বলছে। ভুক্তভোগী গৃহবধূর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। এক শালিসদার বলেন, শালিসে ভুল শিকার করে ধর্ষণের কথা স্বীকার করায় দু’পক্ষের সম্মতিতে ৬৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হলেও নগদ ১৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। বাকি টাকা আজ দেওয়ার কথা থাকলেও পরে আর দেয়নি।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.