রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের মন্ত্রীকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর চিঠি

বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার তাগিদ দিয়ে মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।

নতুন বছরে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরুর প্রত্যাশা জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন বলে রবিবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

চিঠি পাঠানোর কথা জানিয়ে এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, আমাদের একটা বড় চ্যালেঞ্জ রোহিঙ্গা। আমাদের প্রত্যাশা, এ বছর আমরা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াটা বাস্তবায়ন করতে চাই, যাতে শুরু হয়। আপনারা জানেন আমরা কয়েক বছর ধরে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমি আমার কাউন্টার পার্ট মিয়ানমারের উনাকে বলেছি, নতুন বছরে আপনাদের অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা। আর সে সাথে আমরা চাই, এ (প্রত্যাবাসন) প্রসেসটা চালু হোক।

২০১৭ সালের ২৫ অগাস্ট রাখাইনে সেনা অভিযান শুরুর পর কয়েক মাসের মধ্যে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। আগে থেকে বাংলাদেশে ছিল আরও চার লাখ রোহিঙ্গা।

আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে ২০১৭ সালের শেষ দিকে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করলেও সেই প্রত্যাবাসন আজও শুরু হয়নি।

প্রত্যাবাসনের সহায়ক পরিবেশ তৈরির জন্য চিঠিতে মিয়ানমারকে আহ্বান জানানোর কথাও বলেন মন্ত্রী।

চিঠিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, আপনারা বারবার বলেছেন, আপনারা তাদের নিয়ে যাবেন, ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে। আপনারা বলেছেন, তাদেরকে সেফটি অ্যান্ড সিকিউরিটি দিবেন, এটা আমাদের ডিমান্ড। আপনারা বলেছেন, এটা দিবেন। আপনারা বলেছেন সহায়ক পরিবেশ তৈরি করবেন, যাতে স্বেচ্ছায় যায়। কিন্তু প্রগ্রেসটা হয়নি। এজন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছাটা দরকার। নববর্ষে আমরা আশা করি, আপনারা আপনাদের কথা রাখেন।

চিঠির বরাতে তিনি আরও বলেন, ঐতিহাসিকভাবে আপনারা কথা রেখেছেন। ৭৮ সালে বহু লোক চলে আসছিল। ৯১ সালেও অনেক লোক ফিরে আসে। তারপর ৯২ সালে আলোচনার মাধ্যমে আমরা আপনাদের মিয়ানমার থেকে এক্সোডাস হয়েছিল, দুই লাখ ৫৩ হাজার। আপনারা ১৯৯২ সালে ২ লাখ ৩০ হাজারকে নিয়ে গেছেন। সুতরাং আমরা আশা করি, এ বছরে পরিমাণটা অনেক বড়। কিন্তু আমাদের বিশ্বাস এবং প্রত্যাশা আপনারা আপনাদের নাগরিকদের নিয়ে যাবেন। আপনাদের লোকগুলোকে নিয়ে যাবেন। এজন্য যে, এই লোকগুলো আপনাদের কাজে লাগবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, লোকগুলো না নিলে অশান্তি হওয়ার সম্ভাবনা। আর অশান্তি হলে সবার জন্য অসুবিধা। তখন আমাদের যে আশা এই অঞ্চলটাকে উন্নত করা (তা ব্যাহত হবে)। কারণ শান্তি ছাড়া উন্নয়ন সম্ভব না।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.