টাংগা্নইলের ধনবাড়ীতে গুমের’ নাটক বেরিয়ে এলেন নিখোঁজ শিক্ষক !

এস.এম.আব্দুর রাজ্জাক

টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী পৌর শহরের নলহরা (নল্যা) বাজারের আরএনজি প্রি-ক্যাডেট স্কুলের পরিচালক মো. সুলতানুজ্জামান হেলাল (৫০) তার অফিস কক্ষ থেকে দুর্বৃত্তদের হাতে খুন ও পরে গুম হওয়ার যে অভিযোগ উঠেছিল তার কোন ভিত্তি নেই। ওই শিক্ষক প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে গুমের নাটক করেছে। ঘটনার তিনদিন পর স্বেচ্ছায় ‘গুম’ হওয়া ওই শিক্ষক টাঙ্গাইল শহরের পৌর উদ্যানে দ্বিতীয় বার নাটকীয়তায় জন সম্মুখে বেরিয়ে এসেছেন। মো. সুলতানুজ্জামান হেলাল উপজেলা বানিয়াজান ইউনিয়নের বাঐজান গ্রামের মৃত হাসান আলী মন্ডলের ছেলে।

আজ রোবাবার সকালে টাঙ্গাইল শহরের পৌর উদ্যানে তিনি অসুস্থ্য অবস্থায় আবির্ভূত হয়েছেন। রাজবাড়ী জেলার বাসিন্দা বিটিসিএল- টাঙ্গাইলে কর্মরত কাজী রইজ উদ্দিনের মাধ্যমে তার প্রথমে পরিবারের সাথে ও পরে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের সাথে যোগাযোগ হয়। খবর পেয়ে টাঙ্গাইল ডিবি পুলিশ তাকে হেফাজতে নেয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আজ রোববার বিকেলে ধনবাড়ী থানা পুলিশের হেফাজতে হেলালকে দেয়া হয়।

গত বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) রাতে সুলতানুজ্জামান হেলাল ধনবাড়ী বাজার থেকে কাঁচা বাজার করে নল্যা বাজারের বিষ্ণুর সেলুনের দোকানের সামনে তার মোটর সাইকেলটি রেখে চা খেতে যায়। দীর্ঘ সময় চলে যাওয়ায় পরও সে ফিরে না আসলে ফোন দেন বিষ্ণু। ফোন বন্ধ পাওয়ায় বিষয়টি পরিবারের সদস্যদের জানান বিষ্ণু। পরে তার পরিবারের লোকজন এবং বাজারের স্থানীয়রা তাকে খোঁজতে শুরু করেন।

খোঁজার এক পর্যায়ে তার স্কুল অফিস কক্ষের মেঝেতে বিভিন্নস্থানে পড়ে থাকা রক্ত, মোবাইল ফোনটি দেখতে পায় পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়রা। তাকে খুন করে গুম করা হয়েছে বলেও ধারণা করছেন এলাকাবাসী। পরে র্যাব, পুলিশসহ আইন প্রয়োগকারি সংস্থার সংশ্লিষ্টরা মাঠে নামে। কিন্তু ঘটনার কোন কুল-কিনারা খোঁজে পারছিল না তারা। রহস্য ঘণীভূত হতে থাকে। অবশেষে তিনদিন পর গতকাল রোববার সকালে টাঙ্গাইল পৌর উদ্যানে নাটকীয়ভাবে তার খোঁজ মেলে।

রাজবাড়ী জেলার বাসিন্দা বিটিসিএল- টাঙ্গাইলে কর্মরত কাজী রইজ উদ্দিন জানান, হেলাল অসুস্থ্য অবস্থায় তাদের সহযোগিতা চেয়ে ছিলেন। হেলাল তাদের জানিয়েছেন- দুর্বৃত্তরা তাকে রড দিয়ে পিটিয়ে, নাকে চেতনা নাশক দিয়ে অজ্ঞান করে ঢাকা নিয়ে গিয়েছিল। সেখানে কোন এক নারীর সহযোগিতায় তিনি ছাড়া পেয়েছেন। তেঁতুল খাইয়ে তার নেশা কাটানো হয়েছে। টাঙ্গাইলের মানুষ এটুকু শোনে ওই নারী কারো মাধ্যমে টাঙ্গাইলে রেখে যাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন।

ধনবাড়ী থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) মাজাহার  জানান, ডিবি জিজ্ঞাসাবাদ আমাদের হেফাজতে দিয়েছে।

এ ব্যাপারে ধনবাড়ী থানর ওসি চান মিয়া  জানান, প্রতিযোগিতা করে স্কুল গড়ে ছিলেন হেলাল। আশানুরূপ ছাত্র না পেয়ে এবং সম্ভবত দেনায় পড়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন। অফিসে পড়ে থাকা রক্তকে তিনি মুরগির রক্ত উল্লেখ করে জানান, প্রতিপক্ষের সাথে ঝগড়া বিবাদের জেরে শিক্ষা দিতে তিনি গুমের এ নাটক করেছেন।

এ ব্যাপারে সহর প্রি-ক্যাটেড এন্ড হাই স্কুলের পরিচালক সহর আলীর জানান, আমার সারা জীবন ও পরিবারের লোকজনের সারাটি জীবন নষ্ট করে দেওয়ার জন্য মনে মনে রাগ করে নিজের জীবন বাজি রেখে এমন নাটক করেছে হেলাল।

এমন নাটকের কারনে আজ আমার নাম বিভিন্ন মিডিয়াতে প্রকাশ করার সময় অনাহুত গুজুবে কান দিয়ে মিডিয়ার লোক জন আমার বিরুদ্ধে নানা মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করে সমাজে আমাকে হেয়প্রতিপূর্ণ করে।

সহর প্রি-ক্যাটেড এন্ড হাই স্কুলের পরিচালক সহর আলীর আরও বলেন প্রশাসন কে আমার পরিবারের পক্ষ থেকে মহান আল্লাহর নিকট দোয়া জানায় যে,তারা নিষ্ঠার সহিদ তাদের দায়িত্ব পালন করেন। আর যার কারনে আমার পরিবার ও আমি আমার সারা জীবনের জন্য বেচে যাই মিথ্যা অপবাদ থেকে তা না হলে বাকী জীবন বিনা দোষে জেল খানায় কাটাতে হত। মহান আল্লাহ যে আছে এটাই তার প্রমান। সহর সারা বিশ্ববাসির কাছে দোয়া চান।

এ ব্যাপারে হেলালের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি কোন কথা বলেনি। হেলাল বর্তমানে নিজ বাড়ীতে আছে । প্রতিদিন তাখে দেখার জন্য বিভিন্ন এলাকার লোকজন বিরজমান।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.