তারাগঞ্জে বাতির নিচে অন্ধকার

 

খলিলুর রহমান স্টাফ রিপোর্টারঃ

উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি, কেবল রয়ে গেছে বাতির নিচে অন্ধকার। ভোগান্তি যেন কমছে না, দিনের পর দিন বেড়েই চলছে। প্রায় পৌনে দুই কোটি টাকা যার ইজারা মূল্য, সেখানে কোন রকম সংস্কার ও পরিবর্তনের ছোয়া লাগেনি রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার একমাত্র বাজারের প্রাণ ঐতিহ্যবাহি তারাগঞ্জ হাটে এমনটাই অভিযোগ করেন ভুক্তভুগিরা।

গতকাল শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, তারাগঞ্জ হাট-বাজারে ছোট বড় প্রায় নয়শত দোকান রয়েছে। এসব ব্যবসায়ীরা ঝুকির মধ্যে তাদের ব্যবসা চালিয়ে আসছেন। রাতের আধারে নিরাপত্তা নিয়ে প্রায় সময়েই নানা প্রশ্ন উঠে। তার সুবিধার্থে সোলার প্যানেল লাইট নির্মাণ সহ বিদ্যুতের খুঁটিতে প্রায় দুই বছর পূর্বে সাতাশটি লাইট নির্মাণ করে ছিল স্থানীয় সরকার বিভাগ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিদ্যুৎ বিলের জটিলতার কারনে সেই লাইট গুলো প্রায় দেড় বছর হতে বন্ধ রয়েছে। যার ফলে চুরি সহ নানা কারনে পাহাড়াদার সহ ব্যবসায়িদের ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে। এছাড়াও এই হাটটি ইজারা মূল্যে রংপুর জেলার মধ্য অন্যতম ঐতিহ্যবাহী হাট। দোকান মালিক সমিতি ব্যবসায়ি সমিতি ও বণিক সমিতির একাদিক সদস্য লাইট ও পরিস্কার পরিচ্ছন্ন সহ নানা সমস্যার কথা উল্লেক করে অভিযোগ করেন।

মুদি ব্যবসায়ি নির্মল সাহা বলেন, প্রায় দেড় বছর ধরে বাজারের লাইট গুলো বন্ধ থাকায় আমরা ঝুঁকিতে আছি। যে কোন সময় চুরি ও ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। আমরা ব্যবসায়িরা একাধিকবার কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি তাতে কোন ফল প্রসু হয়নি।

পাহাড়াদার টন্না মামুদ বলেন, এখন এমনি শীতকাল দুর থাকি দেখা যায় না। রাতে ডিউটি করতে হামার সমস্যা হয়,লাইট গুলো চালু থাকলে হামার ভালো হইল হয়।

কাপড় ব্যবসায়ি রেজাউল করিম রেজা বলেন, রাতের অন্ধকারে বাজারের কাপড়ের দোকান গুলো খুবেই ঝুকিপূর্ণ। সরকারি খরচে বৈদ্যুতিক খুঁটির সাথে লাইট নির্মাণ করেও বর্তমানে সেগুলো প্রায় দেড় বছর ধরে অকেজো হয়ে আছে। যেকোন সময় চুরি সহ বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। এ সকল বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে দায় বহন করতে হবে।

বণিক সমিতির সভাপতি জয়নাল আবেদীন আপান বলেন, আমরা আসলে সত্য কথা বলতে নিরুপায়। বাজারে সমস্যা সহ যেকোন ঘটনা অবগত করলেও কোন পদক্ষেপ নেন না প্রশাসনিক লোকজন।

কুর্শা ইউপি চেয়ারম্যান আফজালুল হক সরকার বলেন, আমাদের উপজেলার সবচেয়ে বড় হাট-বাজার এটি। আমি উন্নয়নের জন্য নানাভাবে কাজ করেছি। দোকান ব্যবসায়িদের নিরাপত্তা ও চুরি রক্ষার্থে সোলার লাইট ও বৈদ্যুতিক খুঁটির সাথে লাইট স্থাপনের ব্যবস্থা করেছি। তবে বিল সংক্রান্ত ঝামেলার জন্য সেই লাইট গুলো এখন বন্ধ আছে।

তারাগঞ্জ হাট ইজারাদার আতিকুল ইসলাম বলেন, হাটের ওই বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের কথা পরিপত্রে কোথাও উলেখ নেই। তাছাড়া চেয়ারম্যানের নামে ওই বিদ্যুতের মিটার, এটি সম্পূর্ণ স্থানীয় পরিষদ ও প্রশাসনের ব্যাপার।

ওসি জিন্নাত আলী বলেন, বাজারের লাইট গুলো বন্ধ থাকায় যেকোন মুহুর্তে কোন বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। এতে করে পাহাড়াদার ও পুলিশের দায়িত্ব পালন করতে খুবেই সমস্যার সম্মুখিন হতে হয়।

ইউএনও আমিনুল ইসলাম বলেন, আমি বিষয়টি জেনেছি এটি খুবেই গুরুত্বপূর্ণ। খুব দ্রুত স্থানীয় চেয়ারম্যান ও ব্যবসায়িদের নিয়ে আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা করবো।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.