তালতলীতে বার্ষিক নারী নির্যাতনের তথ্য উপস্থাপন

মো.মিজানুর রহমান নাদিম, বরগুনা প্রতিনিধি:
বরগুনার তালতলী উপজেলার বড়বগী ইউনিয়ন পরিষদের হল রুমে জাগোনারী  আয়োজিত ‘ বার্ষিক নারী নির্যাতন প্রতিবেদন  উপস্থাপন করা হয়ছে।বড়বগী ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর মিয়া আলম মুন্সি  এ ধরণের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘নারী নির্যাতন’ শুধু একা নারীদের সমস্যা নয়, এটা পুরুষদেরও সমস্যা। এখানে নারী-পুরুষ সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।
এ সময় বরবগী ইউনিয়নে গত এক বছরে
নারী নির্যাতনের পরিসংখ্যানের নারী নির্যাতনের ঘটনার তথ্য বিশ্লেষণ ও মূল উপস্থাপনায় এ চিত্র তুলে ধরেন জাগো নারীর সেইফ স্পেস প্রকল্পর  কর্মসূচির তালতলী উপজেলার প্রধান মোসা. লাভলী। এ সময়  তিনি বলেন ২০১৯ সালে নথিভুক্ত মোট নারী নির্যাতনের মধ্যে মেয়ে শিশু নির্যাতনের হার ২০ শতাংশ। মেয়ে শিশুদের মধ্যে ১২-১৭ বছর বয়সিরা সবচেয়ে বেশি (৬০.শতাংশ ) নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ১৮ – ৩৫ বছরে ২০ শতাংশ।এবং জাগো নারী কয়েকটি স্কুলে  কিশোর-কিশোরী ক্লাব গঠন করা হয়েছে ।
 নারী নির্যাতন প্রতিরোধে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নারীদের আরো বেশি সোচ্চার হওয়ার তাগিদ দেন। তিনি বলেন, নারী নির্যাতন রোধে আমাদের ভালো আইন আছে ঠিকই। কিন্তু অনেক নারী আছেন যারা এ ধরণের আইন সম্পর্কে জানেন না। এখন আমাদের আইন সম্পর্কে জানানোর জন্য উদ্যোগ নিতে হবে।
তথ্য সংরক্ষণ করে। নথিভুক্ত তথ্যানুযায়ী দেখা যায়, মোট নির্যাতনের মধ্যে শারীরিক নির্যাতনের হার ৬৭ শতাংশ, যৌন নির্যাতনের হার ১৯ শতাংশ এবং মানসিক নির্যাতনের হার ১৪ শতাংশ। নারীদের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ঘটেছে শারীরিক নির্যাতন এবং শিশুদের মধ্যে যৌন নির্যাতন। যৌন নির্যাতনের ক্ষেত্রে ১৮ বছরের নীচে শিশুদের মধ্যে প্রতিদিন গড়ে ১.৭ জন শিশু ধর্ষণের শিকার।
এতে আরো বলা হয়, নির্যাতনের শিকার নারীদের ৩৯% মামলা বা আইনগত পদক্ষেপ নেয়ার জন্য প্রক্রিয়াধীন ছিল, মাত্র ২৬% কেইস ফাইল হয়েছিল এবং ৭% মামলা শালিসের মাধ্যমে মিমাংসা হয় এবং ২৮% কেইস কোন আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।
অনুষ্ঠানে আরও বলা হয়, বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হলেও প্রথাগত সামাজিক মূল্যবোধ ও পরিবারের ‘সম্মান’, পুণরায় নির্যাতনের ভয়, উপযোগী পরিবেশ না পাওয়া ইত্যাদি কারণে নারীরা তা প্রকাশ করতে চাননা। শুধুমাত্র গুরুতর শারীরিক ও যৌন নির্যাতন ছাড়া অন্যান্য নির্যাতনগুলো প্রকাশিত হয় না। ফলে নির্যাতনের যে চিত্র পাওয়া যায় তা বাস্তব ঘটনার চেয়ে অনেক কম।
জাগোনারীর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গড়ে প্রতি মাসে  প্রতিদিন ১০ টি এবং প্রতি ইউনিয়নে ১.৫ টি নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। প্রায়ই এসব নির্যাতনের ঘটনা ঘটলেও পারিবারিক, সামাজিক ও মামলার দীর্ঘ সূত্রিতার কারণে অধিকাংশ নারী আইনি পদক্ষেপে যেতে চান না। অনুষ্ঠানে শেষে চারজন সুখী দম্পতিকে পুরস্কার দেওয়া হয়।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.