ফেসবুকে ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকিতে ছাত্রীর আত্মহত্যা

পিরোজপুর: পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় আপত্তিকর ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকিতে রুকাইয়া রুপা (১৫) নামে এক স্কুলছাত্রী আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার (৩১ আগস্ট) দুপুরে রুপার সহপাঠীরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। এ সময় বক্তারা বখাটে তামিমের গ্রেফতারের দাবি জানান।

নিহত রুকাইয়া রুপা উপজেলার ভান্ডারিয়া বন্দর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী ও পৌর শহরের হোটেল ব্যবসায়ী মো. রুহুল আমীন মুন্সির মেয়ে। রুপার সহপাঠীদের মানববন্ধন, ইনেসেটে রুপা। ছবি: বাংলানিউজসে ওই বিদ্যালয়ের কেবিনেটের প্রধান সদস্য। 

নিহতের বাবা মো. রুহুল আমীন মুন্সি জানান, বিগত কয়েক মাস ধরে বিদ্যালয়ে যাওয়া আসার পথে তার মেয়েকে উত্ত্যক্ত করত এবং প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল পৌর এলাকার নিজ ভান্ডারিয়া গ্রামের মঞ্জু খানের ছেলে তামিম খান (১৯)। এতে রুপা রাজি না হওয়ায় তার একটি ছবি এডিট করে বিভিন্ন ফেসবুক আইডির মেসেঞ্জারে পাঠিয়ে দেয় বখাটে তামিম।

শুক্রবার (৩০ আগস্ট) বিকেলে এক সহপাঠীর সঙ্গে প্রাইভেট শেষে বাসায় ফেরার পথে পুনরায় রুপার পথ আটকে বিরক্ত করতে থাকে তামিম। এ সময় তার সঙ্গে প্রেম না করলে এডিট করা ছবিটি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। রুপা বাড়িতে ফিরে বিষয়টি তার মাকে জানায়। তার মা বিষয়টি তাৎক্ষণিক তার বাবাকে জানালে রাতে বাড়ি ফিরে এ বিষয়ে কথা বলবেন বলে তিনি রুপার মাকে জানান।

ওই দিন রাত ১০টায় বাড়ি ফিরে তিনি রুপাকে তার ঘরে ডাকতে পাঠালে ভেতর থেকে ঘরের দরজা বন্ধ পান। অনেক ডাকাডাকির পরও তার কোনো সাড়া না পাওয়ায় ঘরের দরজা ভেঙে ফেলেন। এ সময় তাকে ঘরের মধ্যে অচেতন অবস্থায় পান। রুপা ঘরে থাকা ঘুমের ওষুধসহ বিভিন্ন ধরনের ওষুধ খেয়ে অচেতন হয়ে পড়ে। তাকে উদ্ধার করে ভান্ডারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। শেবাচিমে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই রাত আড়াইটার দিকে তার মৃত্যু হয়।

এ ঘটনার প্রতিবাদে ও বখাটে তামিমের গ্রেফতারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে শনিবার দুপুরে ভান্ডারিয়া বন্দর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা ওই বিদ্যালয়ের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে।

এতে বক্তব্য রাখে ওই বিদ্যালয়ের ছাত্রী তাহিয়া তাইফুল, রূপকথা রানী মেঘা, আমিনা আফরোজ প্রমুখ।

এ ব্যাপারে ভান্ডারিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মাকসুদুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, নিহতের পরিবার মরদেহ নিয়ে ব্যস্ত, তাই তারা এ ব্যাপারে এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তবে অভিযুক্তকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.