ইউপি চেয়ারম্যানের হাতে সাধারণ জনগণ হয়রানির শিকার

0
মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম: বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি:
জন্মনিবন্ধন ডিজিটাল প্রিন্ট কপি সংগ্রহ করতে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে গিয়ে গালাগাল খেয়ে খালি হাতে ফিরে আসতে হয় একাধিকবার। এরই মধ্যে একবার ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তার মাধ্যমে ইন্টারনেট থেকে জন্ম নিবন্ধন ডিজিটাল প্রিন্ট কপি হাতে পেয়ে যায়। এ কাগজে স্বাক্ষর নিতে গেলে তা টুকরো টুকরো করে ছিঁড়ে ফেলে দেন ইউপি চেয়ারম্যান। এঅবস্থায় জন্ম নিবন্ধন ডিজিটাল প্রিন্ট কপি না পাওয়ায় হাল নতুন ভোটার তালিকায় তালিকাভুক্ত হতে পারছেনা তিন কিশোরী যুবক। এ ঘটনাটি- বান্দরবানের রুমায় গালেঙ্গ্যা ইউনিয়নের চিত্র।
 সোমবার(০৬/০৫/২০১৯০) দুপুরে রুমা বাজার সংলগ্ন অস্থায়ী বাস স্টেশনের পাশে একটি ছোট্ট মুদি দোকানে এ প্রতিবেদক বসতেই তিন কিশোরী যুবকের উপস্থিতি। নাম- চশৈপ্রু মারমা(১৭), মংচপ্রু মারমা(১৮) ও উমংপ্রু মারমা(১৭)। তারা তিনজনই গালেঙ্গ্যা ইউনিয়নের পান্তলা পাড়ার বাসিন্দা।  দুইজনের পিঠে  ব্যাগ, আরেকজনের হাতে প্লাস্টিক মোড়ানো কিছু কাগজ। তার মধ্যে একজন আংশিক দৃষ্টি প্রতিবন্ধী।
 মুদি দোকানে খোলামেলায় আলাপ চারিতায় তারা জানায়, আমাদের তিনজনই এখনো জাতীয় আইডি কার্ড ও ভোটার তালিকা হয়নি। চলমান ভোটার হাল নাগাদ-এ নতুন ভোটার তালিকাভুক্ত করতে জন্মনিবন্ধন ডিজিটাল প্রিন্ট কপি দরকার হয়। তাই ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জন্মনিবন্ধন ডিজিটাল প্রিন্ট কপি সংগ্রহ করতে আসছেন বলে জানিয়েছেন  চশৈপ্রু মারমা।
সে জানায় ২৯এপ্রিল থেকে আজ  ৬মে পর্যন্ত মোট চারবার ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে যান। কিন্তু জন্মনিবন্ধন ডিজিটাল প্রিন্ট কপি পাওয়া তো দুরের কথা, শুধু অকথ্য ভাষায় আমাদের চৌদ্ধ গোষ্ঠী নাম ধরে গালি গালাজ করে বারবার তাদের তাড়িয়ে দিচ্ছেন ইউপি চেয়ারম্যান শৈউ সাই মারমা।
         গালিগালাজ করে কেন জন্মনিবন্ধন  দিচ্ছে না, এর কারণ জানতে চাইলে তারা বলেন আমাদের অভিভাবকেরা নাকি, তাঁকে(চেয়ারম্যান) নির্বাচনে ভোট দেন নি। চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে থাকে সবসময়। বদনাম করে। এসব কথাবার্তা ওঠিয়ে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করে আমাদের ফিরিয়ে দেন ইউপি চেয়ারম্যান শৈউ সাই মারমা।
এব্যাপারে জানতে মুঠোফোনে
চেয়ারম্যান শৈউসাই মারমা বলেন  তিন কিশোরকে জন্মনিবন্ধন না দেয়ার অভিযোগটি সত্য নয়। এটা ইন্টানের সমস্যার কারণে প্রিন্ট করা এখনো সম্ভব হয়নি। তবে তাদের অভিভাবকদের সাথে নিয়ে আসতে বলেছি। কারণ তাদের অভিভাবকরা দল বেধে মুরগী মেরে শপথ আয়োজন করেছিল য়ে, আমাকে (শৈউসাই চেয়ারম্যানকে)  কখনো ভোট দেবে না। এতে আমার রাগ নেই। তবে কেন তারা ভোট না দিতে শপথ করতে হল, তা জানার জন্য অভিভাবকদের আসতে বলা। অভিভাবকরা যদি আসেন, কথা বলে আমার যদি কিছু দোষ থাকে, তাদের কাছে ক্ষমা চাইবো।
তবে গালেঙ্গ্যা ইউপি সচিব উবানু মারমা বলেন স্বাক্ষর না দিয়ে জন্ম নিবন্ধন সনদ ছিঁড়ে ফেলার কখা শুনেছি। তবে চেয়ারম্যানের সাথে এব্যাপারে সরাসরি কথা হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার(ইউএনও) মোহাম্মদ শামসুল আলম বলেন বিষয়টি মৌখিকভাবে শুনার পর গালেঙ্গ্যা ইউপি চেয়ারম্যানকে যা করার বলে দিয়েছি। এতে কাজ না হলে লিখিত অভিযোগ পেলে তা আরো ব্যবস্থা নেবেন জানালেন ইউএনও শামসুল আলম।
Leave A Reply