বরগুনায় ১৫৬টি প্রাথমিক স্কুল ভবন ঝুঁকিপূর্ণ

0
মো.মিজানুর রহমান নাদিম,বরগুনা প্রতিনিধিঃ বরগুনা জেলায় ৭৯৮ টি  সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় এর মধ্যে ও ১৫৬ টি বিদ্যালয়ের ভবন জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এরমধ্যে  ১৫ টি বিদ্যালয় পরিত্যক্ত । এসব বিদ্যালয়ের নিরাপত্তা পিলারে বড় বড় ফাটল ধরেছে।এ ছাড়া ছাদের পলেস্তার খসে পড়েছে,একটু বৃষ্টি হলে ছাদ চুয়ে পানি পড়ে।ফলেএসব বিদ্যালয়ে আতঙ্কের মধ্যেই চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। এসব পরিত্যক্তও ঝুঁকিপূণ স্কুলভবনে এখনো পাঠদান চলছে।
বরগুনা সদর উপজেলায়২৩০ টির মধ্যে ৫০ টি ঝুকিপূর্ণ ও ১৫টি পরিত্যক্ত । বেতাগী  উপজেলায়  ১২৭ টি প্রাথমিক মধ্যে  ১৯ টি বিদ্যালয় ঝুকিপুর্ণ। বামনা উপজেলায়৬২ বিদ্যালয়ের মধ্যে ৬ টি ঝুকিপুর্ণ।পাথরঘাটা উপজেলায় ১৪৯ টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ৪২ টি বিদ্যালয়  ঝুকিপূর্ণ, এর  মধ্যে ২০টি বিদ্যালয়  অধিক  ঝুকিপূর্ণ । আমতলীতে ১৫২ টির  মধ্যে  ৬টি, তালতলী উপজেলায়  ৬৭ টি মধ্যে ১৬ টি  বিদ্যালয়   ঝুকিপূর্ণ হয়ে পরছে । এসব বিদ্যালয়ে পাঠদান  করানো হয় বলে জানান  সংশ্লিষ্ট উপজেলার শিক্ষা কর্মকর্তারা ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী মন্ত্রনালয়ের(এলজিইডি) অথায়নে ১৯৯৪- ২০০২ সালে মধ্যে এসব  স্কুলভবন  নিমার্ণ করা হয় ।এসব ভবনের ছাদের পলেস্তার খসে পড়ে রড বেরিয়ে গেছে এবং  বৃষ্টি হলে ছাদ চুয়ে পানি পরে । স্কুলভবনের  কক্ষের  ভিতরের দেয়ালে ফাটল ধরেছে।এছাড়া দেয়ালের পলেস্তার খসে পড়ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ৯১নং পু্র্ব গুলিশাখালি সরকারি প্রাথমিক ,পুব ঢলুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সরকারী কলেজ সংগ্লণ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ক্রোক সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, সরকারি কলেজ সংলগ্ন  সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ছাদের পলেস্তার খসে পড়ে রড বেরিয়ে গেছে ও পিলারের  ইট সুরকি খসে ভেতরের রড বেরিয়ে গেছে। ভবনগুলোর মেজে দেবে গিয়ে ভেঙে গেছে্, ও  ভবনের দেয়ালে ফাটল ধরেছে। এছাড়া স্কুল ভবন গুলোর  ছাদের ভিতরের নিরাপত্তা পিলারে ফাটল ধরে ভেতরে রড বেড়িয়ে আসছে।এবং দরজা ও জানালা ভেঙে গেছে।একই অবস্থা তালতলীর মেনিপাড়া, তাতীপাড়া ও উত্তর কড়াইবাড়িয়া,  সরকারী  প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের। পিকে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পর আতঙ্ক বিরাজ করছে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে।

বরগুনা সদর উপজেলা পূর্ব গুলিশা খালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ,পুর্ব ঢলুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,উত্তর বড় লবণ গোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,ফুলতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,সরকারী কলেজ সংগ্লন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়,উত্তর কুমড়াখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়  সহ  ১৫ পরিত্যক্ত।এসব ভবণ ১৯৯০ সাল থেকে ২০০১ সালের মধ্যে নিমাণ কর হয়। নিম্নমানের নিমাণ সামগ্রী দিয়ে স্কুল ভবণ নিমাণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেণ শিক্ষকরা।

৯১ পুব গুলিশাখালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.আবদুল রাজ্জাক বলেন, ২০০৭ সালে সিডরে আমাদের স্কুল ভবননটি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। বতমানে ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছেন কতৃপক্ষ ।তিনি বলেন বিকল্প কোন ভবন না থাকায় এক রকম বাধ্য হয়ে পরিত্যক্ত বিদ্যালয় ভবনে পাঠদান করাতে হয়।এই স্কুলে শিক্ষার্থী সংখ্যা ১০৯ জন।
।ক্রোক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.আবদুল আলীম বলেন,এই বিদ্যালয় টি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে।যেকোনো সময় ভবনটি ধসে পড়ে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে ।এছাড়া বাতাস শুরু হলে বাতাসে দোলতে থাকে ।স্কুল ভবন ধসে পড়ার আশঙ্কায় শিক্ষার্থীদের ছুটি দেয়া হয় ।ভবনটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়েছে পরে আছে ।
উপজেলা প্রকৌশলী শওকত হোসেন বলেন,লবণাক্ততা ও আবহাওয়া খারাপ হওয়ার কারণে অল্প সময়ের ব্যবধানে এসব স্কুলভবন পরিত্যক্ত হয়ে পরে।এছাড়া নিম্মমানের নিমাণ সামগ্রী দিয়ে নিমাণ করার কারনেও ভবন পরিত্যক্ত বা ঝুঁকিপূণ হতে পারে।
বরগুনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মিজানুর বলেন,পরিত্যক্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যালয় ভবনের তালিকা তৈরি করে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।আমাদের নতুন বিদ্যালয় ভবন দরকার। আর ঝুকিপূর্ণ  বিদ্যালয় ভবন   যাতে পাঠদান  করার যাবে না । বিকপ্ল  ভবনে পাঠদান করানো হবে ।
জেলা প্রশাসক  কবীর মাহমুদ  বলেন  ঝুকিপূর্ণ বিদ্যালয়ে যাতে পাঠদান  না করানোর জন্য প্রত্যক  উপজেলা  নির্বাহী কর্মকর্তা কে নির্দেশ দেয়া হয়েছে
উল্লেখ্য, শনিবার তালতলীর ছোটবগী পিকে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের বীম ধ্বসে নিহত হয় মানসুরা নামে তৃতীয় শ্রেণীর এক শিক্ষার্থী। এর ঠিক দুইদিন পর মঙ্গলবার ফের বরগুনা সদরের আমতলারপাড়ের মধ্য বরগুনা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বীম ধসে পড়ে। তবে এ ঘটনায় কেউ আহত হয়নি।
Leave A Reply