- কিশোরগঞ্জে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, ৬৯ শতাংশ জমি উদ্ধার - November 7, 2024
- জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসে কিশোরগঞ্জে বিএনপি’র বর্ণাঢ্য র্যালি - November 7, 2024
- ৭নভেম্বার ঐতিহাসিক মহাবিপ্লবের নাম - November 7, 2024
সেলিম রেজা, স্টাফ রিপোর্টার ,বগুড়া ঃ
বগুড়ার শেরপুরের বুক চিরে বয়ে চলা খরস্রোতা করতোয়া নদীটি দখল দূষণের কবলে পড়ে এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে। নদীটি দখল ও দূষণের কবলে হারিয়ে ফেলেছে যৌবন। কথিত আছে এক সময় এই নদীতে জাহাজ চলাচলের কারণে শেরপুর শহরের উপকন্ঠে বারোদুয়ারি হাটের সাথে বিরাট নৌ-বন্দর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্ত সেই অতীত আর নেই। বর্তমানে করতোয়া নদীটির নাব্যতা হ্রাস পেতে পেতে এখন তা মরা খাল ও চাষের জমিতে রূপান্তরিত হয়েছে।বর্ষা মৌসুমে ৩-৪ মাস করতোয়ার বুকে কিছুটা পানি প্রবাহ থাকলেও সারা বছর করতোয়া আর নদীরূপে থাকে না। বর্তমানে এ নদীটি মৃতপ্রায়। নদীর সব রূপ-লাবণ্য হারিয়ে মরা খালে পরিণত হচ্ছে। পানিশূন্য হয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে নদী। এলাকার সাধারণ মানুষ নদী পারাপার হচ্ছেন পায়ে হেঁটেই। নদীর বুক জুড়ে চাষ করা হয়েছে ধান ও সরিষাসহ নানা রকম ফসল।নদীর এমন করুণ দুর্দশার প্রভাব পড়েছে নদী তীরবর্তী গ্রামগুলোর কৃষকসহ জেলে পরিবারগুলোর জীবনেও। বোরো মৌসুমে এই নদীর পানির মাধ্যমে সেচ দিয়ে এলাকার কৃষকরা তাদের জমি চাষাবাদ করতেন। কিন্তু নদীতে পানি না থাকায় কৃষকরা তাদের বোরো চাষ করতে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।অপরদিকে এই করতোয়া নদীই ছিল নদী তীরবর্তী জেলে পরিবারগুলোর জীবিকা নির্বাহের অন্যতম উপায়। জানা গেছে, স্মরণাতীতকালে খরস্রোতা করতোয়া নদীতে জাহাজ চলাচলের কারণে বারোদুয়ারি হাটের সাথে বিরাট নৌ-বন্দরকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে আজকের এই শেরপুর শহর। তখন নদীটি ছিল প্রশস্ত এবং প্রমত্তা। সময়ের সাথে সাথে কালের গর্ভে বিলীন হয়ে করতোয়া আজ হয়ে গেছে ইতিহাস। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সময়ে করতোয়া নদীকে খননের মাধ্যমে নদীর স্বাভাবিক গতিপ্রবাহকে ধরে রাখার চেষ্টা করা হয়, এরই ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ ১৯৯০ সালে পুনরায় নদীটি খনন করা হলেও পরবর্তীতে এই কার্যক্রম অব্যাহত না থাকায় বর্তমানে নদীটি মরা খালে পরিণত হয়েছে। করতোয়া নদীটি কল্যানিতে বাঙ্গালী নদীর সাথে মেশার আগ পর্যন্ত কোথাও হাটু জল আবার কোথাও পানিই নেই। নদীতে পানি না থাকায় দেশীয় প্রজাতির মাছ আর পাওয়া যায় না, নদীর গতিপথ বলে আর কিছু আছে বলেও মনে হয় না। ফলে নদীর বুক চিরে জেগে উঠেছে ফসলি জমির মাঠ, কৃষকেরা রাতদিন পরিশ্রম করে সেখানে ফলাচ্ছে সোনালি ফসল। ফলে বর্ষা মৌসুমেও মাত্র কয়েক সপ্তাহ ছাড়া আর নৌকা চলাচল করতে পারেনা।এ ছাড়াও করতোয়া নদীটির বিভিন্ন এলাকা অবৈধ দখলদারদের দখলে চলে যাওয়ায় নদীটি আরো ক্ষীণ হয়ে গেছে। তাছাড়া করতোয়া নদীর বিভিন্ন এলাকায় হোটেলের বর্জ্য ও ক্ষতিকর পদার্থ ফেললেও সেদিকে কারও নজর নেই। শেরপুরবাসী নদীটি সংস্কারের দাবি জানালেও আজও সেই দাবি কার্যকর হয়নি। ইতিহাস ও কালের স্বাক্ষী আজকের এই করতোয়া নদীটি অবিলম্বে খনন করে নদীর পানি প্রবাহ ফিরিয়ে দেওয়া, স্থানীয় জেলেদের কর্মসংস্থান ও এলাকার কৃষকদের চাষাবাদের সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়ার জন্য এলাকাবাসী সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
এ করতোয়া নদীর সিমানা নির্ধারণ করে গতিপথ ফেরানোর ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার লিয়াকত আলী শেখ জানান, করতোয়া নদীর সিমানা নির্ধারণের ব্যাপারে কোনো চিঠি পাইনি। তবে বগুড়া থেকে করতোয়া নদীর সিমানা নির্ধারণ ও সংস্কারের কাজ শুরু হবে পরবর্তীতে শেরপুর উপজেলার দিকে কাজ শুরু হবে এবং করতোয়া নদী দখলের কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি দু-একটি মৌখিক অভিযোগ পাওয়া গেছে তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।